ইউক্রেনের পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরেকটি গ্রাম সোমবার (১০ জুন) দখল নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় একটি বড় শীর্ষ সম্মেলনের আগে ধারাবাহিক এই সাফল্যের দাবি করলো মস্কো।
কয়েক ডজন বিশ্বনেতা ও শীর্ষ কূটনীতিক সুইজারল্যান্ডের ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সপ্তাহান্তে বিশ্বনেতাদের এই বৈঠকে কিয়েভের প্রতি তাদের সমর্থনের আশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এদিকে, প্রায় এক বছরের অচলাবস্থার পর ইউক্রেন এই বসন্তে ডজন ডজন ফ্রন্টলাইন বসতি পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। রাশিয়ার সেনারা এসব এলাকায় সেনা ও গোলা-বারুদ সরবরাহ জোরদার করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার বলেছে, তাদের বাহিনী ‘অগ্রগতি অব্যাহত রেখে শত্রুর প্রতিরক্ষার ব্যুহ ভেদ করেছে এবং রাশিয়ানিয়ন্ত্রিত শহর দোনেটস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত স্টারোমায়োরস্কি বসতি দখল করেছে।
এই গ্রাম হারানোর বিষয়টি কিয়েভের জন্য একটি প্রতীকী পরাজয়। কারণ, ইউক্রেন গত বছর পাল্টা আক্রমণে যে কয়েকটি গ্রাম পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল, এটি সেগুলোরই একটি। দোনেৎস্ক অঞ্চলের দক্ষিণের সম্মুখ ফ্রন্টলাইনেই স্টারোমায়োরস্কি গ্রামটি অবস্থিত।
মস্কো ২০২২ সালে যে চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল, দোনেৎস্ক তার একটি এবং সেখানে এখনো কিছু ফ্রন্টে তীব্র যুদ্ধ চলছে।
পুতিন গত সপ্তাহে একটি অর্থনৈতিক ফোরামে বলেছিলেন, রাশিয়া চলতি বছরে ইউক্রেনের ৪৭টি শহর ও গ্রাম দখল করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চল। গত মাসে একটি বড় স্থল হামলা চালিয়ে এটি দখল করে নেয় মস্কো। এর ফলে সেখান থেকে হাজার হাজার ইউক্রেনীয়কে সরিয়ে নেওয়া হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান গত রবিবার বলেছেন, ওয়াশিংটন আংশিকভাবে মার্কিন সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার অনুমতি দেয়ার পর খারকিভ সীমান্ত অঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতি থমকে গেছে।
বাইডেন গত সপ্তাহে নিশ্চিত করেছেন, তিনি মধ্য সুইজারল্যান্ডের লুসার্ন হ্রদের পাশে বার্গেনস্টক রিসোর্টে ১৫-১৬ জুনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন না। বিশ্লেষখদের মতে, এটি কিয়েভের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
বাইডেনের পরিবর্তে সেখানে ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এবং আর্থিক সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
মস্কোর মিত্রদের মধ্যে উচ্চ-স্তরের বিশেষ করে প্রধান মিত্র চীনের উপস্থিতি নিশ্চিত করার আশা করেছেন জেলেনস্কি।
বেইজিং ওই সমাবেশের সমালোচনা করে বলেছে, ‘রাশিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া এই সম্মেলনে চীনের অংশগ্রহণ করা কঠিন হবে।’
সোমবার সুইস প্রেসডেন্সি জানিয়েছে, ৯০টি দেশ তাদের যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।