ভালবাসার মানুষের জন্য নাকি সাত সমুদ্র তেরো নদী পারও করা যায়। রূপকথার গল্পে এমন চিত্রই ফুটে ওঠে। কিন্তু এই রূপকথার গল্পকে সত্যি প্রমাণ করলেন এক তরুণ।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, এই তরুণ ভারতীয় নাগরিক হলেও থাকেন লন্ডনে। তার নাম বীরজিৎ মুঙ্গালে। নাম যেমন বীর, স্বভাবেও বীর তিনি। ১৬টি দেশ পার করে, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আসার সাহস রয়েছে তার। কারণ, ১৬টি দেশ পার করে মায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
মায়ের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি বিখ্যাত সিল্ক রুটে গাড়ি চালানোর ইচ্ছাও ছিল বীরজিতের। তাই যেমন ভাবা, তেমন কাজ। বীরজিতের মা থাকেন মহারাষ্ট্রের ঠানেতে।
বীরজিৎ খাতায়কলমে হিসাব করে দেখেন, লন্ডন থেকে ঠানে ১৮,৩০০ কিলোমিটারের পথ। তাই অফিস থেকে দুই মাসের ছুটি নিয়ে ফেললেন তিনি। তারপর যাত্রা শুরু।
এই যাত্রায় বীরজিতের সঙ্গী হয়েছিলেন রোশন শ্রেষ্ঠ। তবে বীরজিতের সঙ্গে লন্ডন থেকে নেপাল পর্যন্ত যান রোশন। বাকি পথ একাই গাড়ি চালিয়ে আসেন বীরজিৎ।
পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, চীন, তিব্বত, নেপাল, ভারতসহ মোট ১৬টি দেশ অতিক্রম করেছেন তিনি।
বীরজিৎ বলেন, ‘এসইউভি নিয়ে লন্ডন থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম। সব রকম অনুমতি আগে থেকেই নেওয়া ছিল। নিরাপত্তার জন্য রাতে গাড়ি চালাতাম না। চেষ্টা করতাম, প্রতি দিন ৪০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার গাড়ি চালানোর। কোনো কোনো দিন পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১০০০ কিলোমিটার পথও গাড়ি চালিয়েছি।’
তবে এই যাত্রা খুব একটা সহজ ছিল না বলে জানান বীরজিৎ। তিনি বলেন, ‘যাত্রাটি কঠিন ছিল। বরফ, ঠান্ডা, কোথাও কোথাও আবহাওয়া ভীষণ খারাপ পেয়েছি।’
বীরজিৎ যখন ৫২০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিলেন, তখন ‘অলটিটিউড সিকনেস’-এ ভুগেছিলেন তিনি। তবে কঠিন যাত্রা, দুর্গম পথ পেরিয়ে এলেও এই অভিজ্ঞতা কোনোদিনও ভোলার নয় বলে জানিয়েছেন বীরজিৎ। এতটা পথ গাড়ি চালিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
কিন্তু, আবার গাড়ি চালিয়ে ফিরতে চান না তিনি। বীরজিৎ জানান, যে এসইউভি চালিয়ে তিনি এসেছেন, তা জাহাজের মাধ্যমে ব্রিটেনে পাঠিয়ে দেবেন এবং তিনি আকাশপথে ফিরে যাবেন লন্ডনে।