যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচনের আগে এক নির্বাচনি বিতর্কে অংশ নিয়ে বাংলাদেশিদের কটাক্ষ করে তোপের মুখে পড়েছেন লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টার্মার। তার কটাক্ষের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে দলটির ডেপুটি লিডার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবিনা আক্তার।
বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পদত্যাগ করে সাবিনা আক্তার বলেছেন, ‘দলের নেতা যখন আমার সম্প্রদায়কে একঘরে করে, আমার বাংলাদেশি পরিচয়কে অপমান করে, তখন আমি আর দল নিয়ে গর্ব করতে পারি না।’
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ‘ডেইলি সান’ আয়োজিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে পাঠকদের এক প্রশ্নের জবাবে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টার্মার বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে যদি কেউ আসে, তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। কারণ, বর্তমান সরকারের তেমন কোনো প্রক্রিয়া নেই। ক্ষমতায় এলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নিয়ে লেবার নেতার এমন মন্তব্যকে বর্ণবাদী আখ্যা দিয়েছেন ব্রিটিশ এমপি জর্জ গ্যালাওয়ে। এ ছাড়া নিজ দলের নেতার এমন বেফাঁস মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার এমপি রুশনারা আলী ও আফসানা বেগম।
পরে অবশ্য স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার স্টাফোর্ডশায়ারে এক নির্বাচনি প্রচারণায় গিয়ে স্টার্মার বলেন, ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা যারা আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় অবদান রাখছেন, তাদের উদ্বেগ বা আঘাত করার উদ্দেশ্য আমার মোটেও ছিল না।’
তিনি দাবি করেন, যদি লেবার পার্টি নির্বাচনে জয়ী হয়, তাহলে তিনি ব্রিটেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে দলের ‘অত্যন্ত দৃঢ় সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে চান।
এদিকে পদত্যাগপত্রে সাবিনা আক্তার লিখেছেন, ‘আমি লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলের প্রথম নারী স্পিকার এবং লেবার পার্টির একজন গর্বিত সদস্য ছিলাম। তবে আমি এই দলটি নিয়ে আর গর্ব করতে পারি না, যখন দলের নেতা আমার সম্প্রদায়কে একঘরে করে দেয় এবং আমার বাংলাদেশি পরিচয়কে অপমান করে।’
সাবিনা আরও লিখেছেন, ‘আমি সারাজীবন দলকে রক্ষা করেছি এবং এর জন্য খুব গর্বিত ছিলাম। কিন্তু এটা স্পষ্ট, আমার এবং আমার সম্প্রদায়ের কাছে এটি (দলের নেতার মন্তব্য) গ্রহণযোগ্য নয়।’