খান ইউনিস ও রাফাহ হামলায় নিহত ৮, বাস্তুচ্যুত সহস্রাধিক

, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-07-02 15:26:45

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এবং রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কয়েক ডজন।

মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, হাজার হাজার মানুষের বাড়িঘর  আগুনে পুড়ে গেছে, তারা তাদের বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস মিডিয়া জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেনাবাহিনী ছেড়ে যাওয়া এলাকাগুলোয় পুনরায় ট্যাঙ্ক প্রবেশের ঘোষণা দেয়। এসময় ইসরায়েল পূর্ব খান ইউনিসের বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামের বাসিন্দাদের সোমবার তাদের বাড়িঘর খালি করার নির্দেশও দেয়। ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক এবং বিমানগুলো কারারা, আবাসান এবং অন্যান্য অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করে। এতে, যারা এলাকা ছাড়ার নির্দেশে কর্ণপাত করেননি তারা বিপদে পড়েন। ইসরায়েলের হামলার মধ্যেই রাতের অন্ধকারে তারা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।

তিনি একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে রয়টার্সকে বলেন, ৫৫ বছর বয়সী ব্যবসায়ী টেমের বলেন, ‘আমরা কোথায় যাব? ৭ অক্টোবর থেকে ছয়বার বাস্তুচ্যুত হয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবার যখনই মানুষ তাদের বাড়িতে ফিরে যায় এবং তাদের ঘরের ধ্বংসস্তূপের উপরেই বাসস্থান পুনর্নির্মাণ শুরু করেন, তখনই আবার দখলদার ট্যাঙ্কগুলো ফেরত পাঠায় ইসরায়েল, যা অবশিষ্ট থাকে তা ধ্বংস করার জন্য।’

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের বাহিনী খান ইউনিসের এলাকায় হামলা চালিয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) এসব এলাকায় ২০টি রকেট নিক্ষেপ করে তারা। 

বেসামরিক নাগরিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশের কথা উল্লেখ করে তারা বলে, সামরিক বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে বেসামরিক অবকাঠামো এবং বৃহত্তর জনসংখ্যাকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ইসলামপন্থি গোষ্ঠীরা যদিও ইসরায়েলের এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

হামাসের একটি মিত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ বলেছে যে ‘আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শত্রুর অপরাধ’ এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল এবং অব্যাহত সংঘাতে গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা হামাসের সন্ত্রাসী বাহিনীকে নির্মূল করার পর্বের শেষের দিকে অগ্রসর হচ্ছি এবং এর অবশিষ্টাংশে আঘাত করার ধারাবাহিকতা থাকবে।’

হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ গাজার অভ্যন্তরে কর্মরত ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসরায়েলে সময়ে সময়ে রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাস বলেছে যে নেতানিয়াহু যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং গ্রুপটি বছরের পর বছর ধরে লড়াই করতে প্রস্তুত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য আরব মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টাও স্থবির হয়ে পড়েছে। হামাস বলেছে, যেকোনো চুক্তির জন্য অবশ্যই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধে শুধুমাত্র সাময়িক বিরতি গ্রহণ করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর