গাজায় তিনদিনের মানবিক যুদ্ধবিরতিতে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে ১৩ লাখ পোলিও ডোজ খাওয়ানো হচ্ছে।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩ দিন গাজা উপত্যকায় ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে জাতিসংঘের বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এই ৩ দিন মানবিক যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে ইসরায়েল রাজি হওয়ার পর রোববার গাজায় শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়াবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
জানা গেছে, রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ৩ দিন ১০ বছর বয়সের নিচে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে পোলিও ডোজ খাওয়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, ২৫ বছর পর গাজায় এবারই প্রথম ১০ বছর বয়সের এক শিশুকে পাওয়া গেছে, যে পোলিও রোগে আক্রান্ত। সে এখন পায়ের প্যারালাইসিসে ভুগছে।
সংস্থাটি জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় উপসর্গবিহীন শতাধিক পোলিও আক্রান্ত রোগী রয়েছে। বেশির মানুষেরই পোলিও রোগের উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা নেই। অনেকেই হয়ত সপ্তাহখানেকের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান। পোলিও রোগে আক্রান্ত হলে শেষমেষ রোগী পঙ্গুত্ববরণ করে। এ রোগ শ্বাসপ্রণালীর মাংসপেশিকে আক্রান্ত করে।
সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, গাজা উপত্যকায় পোলিও টিকা খাওয়ানো একেবারে সহজসাধ্য কাজ হবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়ে, গাজার রাস্তা, হাসপাতালসহ ঘরবাড়ি ভীষণ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, সংস্থাটি গাজার শিশুদের পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানোর জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। তবে এ মানবিক যুদ্ধবিরতিতে তাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন।
ফিলিস্তিন অঞ্চলের বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. রিক পিপারকর্ন বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানোর ক্যাম্পেইন চলবে।
ডা. রিক বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বিতভাবে দক্ষিণ গাজা থেকে উত্তর গাজা পর্যন্ত ১০ বছরের নিচে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুকে ১৩ লাখ পোলিও ডোজ খাওয়ানো হবে মানবিক যুদ্ধবিরতির তিনদিনে।
রামাল্লাভিত্তিক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নির্ধারিত ৪শটি কেন্দ্র থেকে পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে বেশির ভাগই খান ইউনিসে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং মাঠপর্যায়ের হাসপাতালও রয়েছে।
এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি এবং এখানেই ১০ বছরের নিচে ২৩ লাখ ৯শ শিশু রয়েছে।
ইউনিসেফের প্রতিনিধি আম্মার জানিয়েছেন, ২ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনে অংশ নেবেন।