পাকিস্তানে এক কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত সিকিউরিটি গার্ডের একটি ভিডিওক্লিপ সপ্তাহখানেক আগে সামাজিক সাইটে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর থেকে লাহোরসহ রাওয়ালপিন্ডিতে সহিংস প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
এই প্রতিবাদের জেরে রাওয়ালপিন্ডিতে ১শ ৫০ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর শহর পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, পুলিশ কাউকেই আটক করতে চায়নি। কিন্তু কেউ যদি আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তাহলে পুলিশ তাদের আটক তো করবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, সপ্তাহখানেক আগে একটি প্রাইভেট কলেজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সে কলেজের এক সিকিউরিটি গার্ডের বিরুদ্ধে। সে বিষয়ের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক সাইটে ছড়িয়ে পড়লে লাহোরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর লাহোরের বিভিন্ন কলেজের প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। তারা পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করতে হয়। এ ঘটনায় ২৮ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার রেশ রাওয়ালপিন্ডিতেও ছড়িয়ে পড়ে।
এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাওয়ালপিন্ডির বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে অন্তত ১শ ৫০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।
এবিষয়ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়াম নওয়াজ বলেন, ধর্ষণের খবরটি ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে সামাজিক সাইটে একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মিথ্যা খবর ছড়ানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে ইমরান খানের দল পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ) জড়িত।
এদিকে, পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজেজ (পিজিসি)-এর পরিচালক আগা তাহির জানিয়েছেন, ঘটনাটির কোনো ভিত্তি নেই।
দ্য ডনকে রাওয়ালপিন্ডির সিনিয়র সুপারিটেন্ডেন্ট অব পুলিশ-এসএসপি (অপারেশন) হাফিজ কামরান আসগর জানিয়েছেন, প্রতিবাদের নামে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ২শ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ঘটনার পর শহরের বিভিন্ন কলেজের সামনেসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
লাহোরের পর বুধবারও রাওয়ালপিন্ডিতে ব্যাপক আকারে ছাত্র বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ প্রাইভেট কলেজের ব্যাপক শিক্ষার্থীরা ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদে শামিল হন।
জানা যায়, গুজরাট জেলার একটি কলেজের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় সে কলেজের সিকিউরিটি গার্ড গণপিটুনিতে নিহত হন।
এছাড়া গুজরাট জেলার লালমুসা ও খারিয়ান শহরের পিজিসি ক্যাম্পাসগুলোতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগে ৪শ ৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এঘটনায় ১শ ৮৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর প্রভাব পড়ে লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডির বিভিন্ন কলেজগুলোতে।