গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ট্রামি'র আঘাতে ফিলিপাইনের মধ্য ও উত্তর অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৭৬ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে ভূমিধস এবং বন্যার ফলে অঞ্চলের বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে আটকা পড়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে উদ্ধারকর্মীরা। কিছু এলাকায় মাত্র দুই দিনে দুই মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঝড়টি আজ ভোরে ফিলিপাইন ছেড়ে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর দিয়ে পশ্চিমে যাত্রা করেছে।
বন্যায় কোনো কোনো এলাকার রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছে। ঝড়ের কারণে কয়েকটি শহরের অর্ধাংশ কাদামাটির নিচে চাপা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে এক সরকারি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রবল বন্যার মুখে এক লাখ ৯৩ হাজার লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাদের অধিকাংশ দেশটির বিকোল অঞ্চলের। অঞ্চলটির ৩০ সহস্রাধিক মানুষ বুধবার আকস্মিক প্রবল বন্যার মুখে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।
ফিলিপাইনের বাতাঙ্গাস প্রদেশের পুলিশ প্রধান বলেছেন, রাজধানী ম্যানিলার দক্ষিণে বাতাঙ্গাস প্রদেশে ট্রামির ভূমিধসে ৪৭ জন নিহত হয়েছে। আরও ১৭ জন গ্রামবাসী নিখোঁজ রয়েছেন।
ফিলিপাইনের ন্যাশনাল পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য ফিলিপাইনের বিকোল অঞ্চলে বন্যার পানি ও ভূমিধসে ২৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১১ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ ঘটনায় আরও নয়জন আহত হয়েছে এবং চারজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
দুর্যোগ প্রশমন কর্মকর্তারা এপিকে জানিয়েছেন, বন্যায় ২৬ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
এদিকে এ ঝড়ের প্রভাবে শুক্রবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৫১০ জন যাত্রী বন্দরে আটকে রয়েছেন এবং ৩৬টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ঝড়টির সর্বেশষ অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়, এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।
প্রতি বছর প্রায় ২০টি বড় ঝড় ও টাইফুন ফিলিপাইন বা এর আশেপাশের সমুদ্রে আঘাত হেনে বাড়িঘর, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ঝড়গুলো উপকূলরেখার কাছাকাছি আরো দ্রুত তীব্র আকারে আঘাত হানছে এবং অঞ্চলের স্থলভাগের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে।