স্পেনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। নিখোঁজ রয়েছে আরও কয়েক ডজন মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির সরকার।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মুষলধারে বৃষ্টির ফলে দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনে আকস্মিক বন্যা শুরু হয়।
স্পেনের কর্তৃপক্ষ জানায়, ভারী বর্ষণ এবং শিলাবৃষ্টির কারণে দক্ষিণ-পূর্ব স্পেনে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আর বেশ কিছু মানুষ। নিখোঁজ বাসিন্দাদের উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যার পানির তীব্র স্রোত সেতু এবং ভবন ভাসিয়ে নিয়ে যায়। মানুষকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য ছাদে আশ্রয় নেয়। অনেকে গাছ আঁকড়ে ধরে রাখে।
প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ চরম পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন।
ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট কার্লোস ম্যাজন বলেছেন, এই পর্যায়ে চূড়ান্ত মৃতের সংখ্যার সঠিকভাবে বলা সম্ভব না। কারণ এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে কার্যক্রম চলছে। উদ্ধার কর্মীরা নিখোঁজদের সন্ধানে ড্রোন ব্যবহার করছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বন্যার পানির তীব্র স্রোত রাস্তায় থাকা গাড়ি টেনে নিয়ে যাচ্ছে, সেতু ভেঙে পড়ছে। অন্য ভিডিওতে দেখা গেছে, কোনোভাবে ভেসে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে লোকজন গাছ ধরে আঁকড়ে আছে।
স্প্যানিশ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলের চিভায় মঙ্গলবার মাত্র আট ঘণ্টায় ৪৯১ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যা সেখানের এক বছরের বৃষ্টিপাতের সমান।
রেডিও এবং টিভি স্টেশনগুলিতে বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া লোকেদের সাহায্যের জন্য এবং প্রিয়জনদের উদ্ধার করার জন্য শত শত ফোনকল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এক্স-এর এক পোস্টে নিখোঁজদের দ্রুত উদ্ধারে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি নিজেই উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করছেন বলে জানিয়েছেন।
বন্যা পরিস্থিতিতে তিনি জনগণকে কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, বন্যার কারণে ভ্যালেন্সিয়ায় বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এক শহরের সাথে অন্য শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ অঞ্চলে সব ধরনের ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।