আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সেসের (সিআরপিএফ) গুলিতে ১১ জনের মৃত্যুর পর জিরিবাম জেলায় সোমবার রাত থেকেই কারফিউ জারি করা হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে পশ্চিম ইম্ফল জেলায় সশস্ত্র কুকি জঙ্গিরা হামলা চালান। এ ঘটনায় ২ জন আহত হন। একইসঙ্গে মঙ্গলবার জিরিবামে একটি দগ্ধ বাড়ি থেকে দুই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে সোমবার আসামের সীমান্তবর্তী জেলায় কুকি জঙ্গিদের হামলায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের ২ সদস্য আহত হন।
মঙ্গলবারও কারফিউ বলবৎ ছিল জিরিবাম জেলার বেশ কিছু এলাকায়। গোটা জেলাজুড়েই ছিল থমথমে পরিবেশ। আসামের সীমান্তবর্তী এ জেলাতেই গত সোমবার দুপুরে সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালান এক দল ব্যক্তি। সিআরপিএফ পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীদের ১১ জন নিহত হন।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা সকলেই কুকি গোষ্ঠীর বলে অনুমান তাদের। সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা জিরিবামের একটি থানায় দুই দিক থেকে আক্রমণ চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। থানার পাশে রয়েছে একটি ত্রাণ শিবিরও। হামলাকারীরা ওই ত্রাণ শিবিরকে লক্ষ্য করেও হামলা চালাতে চেয়েছিল বলে জানা যায়।
জিরিবামের বোরোবেকরার এই থানাটি গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকবার হামলাকারীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে। থানায় আক্রমণ করার পর, সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা থানা থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে জাকুরাডোর করোং-এ একটি ছোট বসতির দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানকার বাড়িগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুলিযুদ্ধের পর নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকা থেকে রকেট চালিত গ্রেনেড এবং একে সিরিজের অ্যাসল্ট রাইফেল উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায়। গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম ও লামফেলসহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেও ওই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।