ইরানের যেসব নারী জনসম্মুখে হিজাব পরতে অনাগ্রহী, তাদের চিকিৎসার জন্য ক্লিনিক খোলার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। তবে বিশেষ এই চিকিৎসা কেন্দ্র খোলার ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইরানে নারী ও মানবাধিকার অধিকার সংস্থাগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানে আইন অনুযায়ী সব নারীর হিজাব পরার বাধ্যমূলক। যারা হিজাব পরেন না তাদের ‘মানসিক সমস্যা’ রয়েছে বলে মনে করে দেশটির সরকার। আর তাদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য খোলা হচ্ছে ক্লিনিক।
ইরানের নীতি-নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তেহরান সদর দপ্তরের নারী ও পরিবার বিভাগের প্রধান মেহেরি তালেবি দারেসতানি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘হিজাব না পরার জন্য তাদের বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা’ দেওয়া হবে। তবে এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
ইরানের মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী হোসেন রাইসি বলেন, এই পরিকল্পনা ‘না ইসলামি না ইরানের আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ’।
তিনি আরও বলেন, এটি আরও ভয়ের হওয়ার কারণ হলো এই ঘোষণা এসেছে নীতি-নৈতিকতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তেহরান সদর দপ্তরের নারী ও পরিবার বিভাগ থেকে। এই বিভাগটি সরাসরি দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির অধীনে।
এছারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেছেন, ‘এটি কোনো চিকিৎসা কেন্দ্র হবে না। এটি আসলে হবে কারাগার। আমরা আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি, সঙ্গে ঠিক মতো বিদ্যুৎও পাচ্ছি না। কিন্তু সেখানে রাষ্ট্র একটি কাপড়েরর টুকরার (হিজাব) জন্য চিন্তিত। যদি আমাদের আন্দোলন শুরু করতে হয় তাহলে এখনই সবাইকে রাস্তায় আসতে হবে। নয়ত আমাদের সবার জায়গা হবে কারাগারে।’
গত কয়েকদিন ধরে হিজাব আইন কার্যকরে কঠোরতা অবলম্বন শুরু করেছে ইরান। যারা আইন ভঙ্গ করছেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এছাড়া অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক নারী শিক্ষার্থী হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন। এর প্রতিবাদে তিনি তার পোশাক খুলে প্রতিবাদ জানান। এরপর তাকে গ্রেফতার করে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পরই এই ক্লিনিক খোলার ঘোষণা এল।