অবৈধ সন্তানের বাবা ট্রাম্প!

, আন্তর্জাতিক

সেন্ট্রাল ডেস্ক ২ | 2023-08-28 12:15:37

নারীঘটিত কেলেঙ্কারির অভিযোগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।  প্রথমে এক পর্নো তারকা স্টর্মি  ড্যানিয়েল এবং পরে প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডুগালের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কের কাহিনী ফাঁস হয়। সেই কেচ্ছা বাসি হতে না হতেই এখন তারও বেশি বিব্রতকর আরেক গ্যারাকলে আটকে গেছেন ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক নিউইয়র্কার অনলাইন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ১৯৮০ সালের শেষ দিকে সন্তানের বাবা হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই গোপন তথ্য ফাঁস করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্পের মালিকানাধীন ট্রাম্প টাওয়ারেরই প্রাক্তন দ্বাররক্ষী। ওই দ্বাররক্ষীর মুখ বন্ধ রাখতে তাকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঘুষ দেয় ট্রাম্পের বন্ধুর পত্রিকা দ্য ন্যাশনাল ইনকোয়েরার। দ্য নিউইয়র্কার ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ট্যাবলয়েড পত্রিকা ন্যাশনাল ইনকোয়েরারের এই সংবাদ প্রকাশ করেছে। পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের শেষ দিকে ন্যাশনাল ইনকোয়েরারকে ট্রাম্প টাওয়ারের প্রাক্তন দ্বাররক্ষী ডিনো সাজুদিন জানান, তিনি শুনতে পেয়েছেন ১৯৮০ সালের শেষ দিকে এক গৃহকর্মী সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ট্রাম্প এক সন্তানের পিতা হয়েছিলেন। ‘ধরো এবং হত্যা করো’ এই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ইনকোয়েরার সাজুদিনের কাছ থেকে ৩০ হাজার ডলার দিয়ে তথ্যটি কিনে নেয়। এরপরই ট্রাম্পের পক্ষে ওই প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়া হয়। দ্য নিউইয়র্কারের সাংবাদিক রোনান ফ্যারো গত বৃহস্পতিবার সিএনএনকে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটি ধামাচাপা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ইনকোয়েরারের প্রকাশক ও ট্রাম্পের বন্ধু ডেভিড পিকার। রোনান বলেন, এটা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের গল্প, যারা প্রতিবেদন বন্ধ ও এর বিবরণ বদলে দিতে পারেন। আমি মনে করি জনগণের এগুলো জানা উচিত। এর আগে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডুগালকে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিয়ে মুখ বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি ঘটনা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতা ঘোষণার পরের। সে কারণে অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনের ফলাফল যাতে ট্রাম্পের বিপক্ষে না যায় সে জন্যই এসব কেলেঙ্কারি প্রকাশ পাওয়ার আগেই বাক্সবন্দী করে ফেলা হয়। স্টর্মি ও ক্যারেনের ঘটনায় ট্রাম্পকে সাহায্য করেন তার দীর্ঘদিনের পুরোনো আইনজীবী মাইকেল কোহেন। নতুনটির ব্যাপারে সহায়তা করেছেন ন্যাশনাল এনকোয়ারার পত্রিকার মালিক ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডেভিড পেকার। ঘটনাটির সত্যতা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে সাজুদিন নামের দ্বাররক্ষীকে যে মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়া হয়েছে মুখ বন্ধ রাখার জন্য, এনকোয়ারার সে কথা স্বীকার করেছে। তিনি সত্য কথা বলছেন কি না, তা প্রমাণের জন্য সাজুদিনকে ‘লাই ডিটেকটরে’ পরীক্ষা দিতে হয় বলে পত্রিকাটি জানিয়েছে। তিনি সে পরীক্ষায় পাস করেন। পত্রিকাটির একজন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সিএনএনকে বলেন, কোনো কাহিনির জন্য অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে নানাভাবে তা পরীক্ষা করা হয়। কাহিনির কোনো ভিত্তি না থাকলে ন্যাশনাল এনকোয়ারার মোটা অঙ্কের ‘ফি’ কিছুতেই প্রদান করে না। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তারা কথিত পরিচারিকা ও তাঁর মেয়ের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ন্যাশনাল এনকোয়ারার-এর মালিক ডেভিড পেকারের ক্ষেত্রে একটি বাড়তি জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে জানা গেছে। ট্রাম্পের জন্য ক্ষতিকর প্রতিবেদন ‘হত্যার’ যে নির্দেশ তিনি দিয়েছেন, তা শুধু ‘বন্ধু’ হিসেবে করেছেন; সে কথা মনে করার কোনো কারণ নেই। ভাবা হচ্ছে, তাঁর হাতে হয়তো এমন নথিপত্র রয়েছে, যা প্রকাশ পেলে ট্রাম্প বিপদে পড়তে পারেন। এই বিপদ এড়াতে ট্রাম্প হয়তো তাঁকে বিশেষ ব্যবসায়িক সুবিধার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। নিউইয়র্কার জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই মাসে পেকার এক ফরাসি ব্যবসায়ীকে নিয়ে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন। এই ঘটনার দুই মাস পর সেই ফরাসি ব্যবসায়ীকে নিয়ে তিনি সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর কোনোটাই সম্ভবত কাকতালীয় নয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর