গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড হিসেবে দেওয়া মার্কিন স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে আরব লিগের নেতারা।
রোববার (৩১ মার্চ) তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসে অনুষ্ঠিত আরব লিগের সম্মেলনে মার্কিন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়।
সম্মেলনে আরব লিগ নেতারা বলেন, গোলান সিরিয়ার অংশ। কয়েক দশক ধরে চলা ইসরায়েল প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্ব নিরসন না হলে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা আসবে না।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপরই মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে বলে মত দেন আরব লিগের নেতারা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও আলজাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সম্মেলন শেষে আরব লিগের নেতারা সিরিয়ার উপর পূর্ণসমর্থন ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নেওয়া গোলান মালভূমির উপর সিরিয়ার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে আরব লিগ।
সম্মেলনে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে। উপসাগরীয় বিরোধী, ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব, ইয়েমেন যুদ্ধ, আলজেরিয়া ও সুদানের বিক্ষোভ নিয়ে সম্মেলনে মত-পার্থক্য নিয়ে আলোচনা হয়। এদিকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সম্মেলন থেকে আকস্মিক চলে যান।
তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খেমাইস ঝিনাউয়ি আরব লিগের ৩০তম সামিটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন। এতে তিনি বলেন, ‘আরব অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে চলমান বিরোধ গ্রহণযোগ্য নয়। এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরব দেশেগুলোর এক হতে হবে। এটি এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে’
সম্মেলনে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করে এমন যে কোনো পদক্ষেপ একেবারে প্রত্যাখ্যান করে সৌদি আরব।’
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় সিরীয় ভূখণ্ড গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল জায়গাটি দখল করার পর এখানকার সিরিয়ান আরব বাসিন্দারা অধিকাংশই পালিয়ে যায়। এরপর ১৯৭৩ সালের যুদ্ধে সিরিয়া এটি পুনর্দখলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ১৯৮১ সালে ইসরায়েল গোলানকে নিজের অংশ করে নেয় একতরফাভাবে। তবে ইসরায়েলের এই দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয়নি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
২০১৯ সালের ২৫ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলি দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।