ভারতে ভোট শুরু বৃহস্পতিবার

ভারত, আন্তর্জাতিক

খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-22 21:32:22

নয়াদিল্লি থেকে: ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকালে।

২০টি রাজ্যের ৯১টি আসনে ভোট শুরু হবে। ভোট শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে প্রথম পর্যায়ের ভোট সংশ্লিষ্ট আসনে প্রচারণা শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার (১০ এপ্রিল) কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী শোভাযাত্রার মাধ্যমে আমেথিতে মনোয়নপত্র জমা দেবেন। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দিতে পারেন সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও রবার্ট ওয়াদরা। পরে রাহুল গান্ধী বিহারের কাতিহার ও পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জে সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।

অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বুধবার গুজরাট ও গোয়াতে ভিন্ন জনসভায় অংশ নেবেন। কাশ্মীরের পটিয়ালিতে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও বিজেপি প্রধান অমিত শাহ একটি সমাবেশ করবেন।

বুধবার রাফায়েল রিভিউ আবেদনপত্রের ওপর সুপ্রিম কোর্ট তার রায় ঘোষণা করবে। রাফায়েল চুক্তি নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে বিতর্ক চলছে।

এ বিষয়ে রাহুলের উদ্দেশে মোদি বলেছেন, রাফায়েল কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়। রাহুল তার বাবা রাজিব গান্ধীর মাথা থেকে বাফোর্স কেলেঙ্কারির দাগ মোছার জন্য এটি নিয়ে রাজনীতি করছে।

এবার ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে'র মধ্যে সাত ধাপে লোকসভা নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমেই গঠিত হবে নতুন লোকসভা।

তবে নির্বাচনের ভোট গণনা হবে আগামী ২৩ মে অর্থাৎ সেদিনই জানা যাবে বিজেপি আবারও ক্ষমতায় আসবে কি না। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে আছে কংগ্রেস ও বেশ কিছু আঞ্চলিক দল।

৫৪৩ আসনের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হবে ২৭২ আসন। প্রায় ৯০ কোটি ভোটার এবারের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন এবং এজন্য ভোট কেন্দ্র থাকবে ১০ লাখেরও বেশি।

২০১৪ সালের নির্বাচনে ৬৬% ভোটার ভোট দিয়েছিলেন এবং ৪৬৪টি দলের আট হাজার ২৫০ প্রার্থী সে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

এবার ভোট হবে ১১, ১৮, ২৩ ও ২৯ এপ্রিল এবং ৬, ১২ ও ১৯ মে। কিছু রাজ্যে ভোট হবে কয়েক ধাপে। যেমন পশ্চিমবঙ্গসহ চার রাজ্যে ভোট হবে সাত ধাপে।

ভারতের প্রথম নির্বাচন হয়েছিল ১৯৫১-৫২ সালে এবং সেটি শেষ করতে সময় লেগেছিল তিন মাস। ১৯৬২ থেকে ৮৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে সময় লেগেছিল ৪-১০ দিন। সবচেয়ে কম চারদিন লেগেছিল ১৯৮০ সালের নির্বাচনে।

২০১৪ সালের নির্বাচনে নারী ও পুরুষের ভোটারের ব্যবধান ছিল খুব কম। নারীদের ভোট দেওয়ার হার ছিল ৬৫.৩ শতাংশ। আর পুরুষের ছিল ৬৭.১ শতাংশ।

দলগুলোও নারীদের গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের জন্য থাকছে নানা প্রতিশ্রুতি-শিক্ষা লোন, ফ্রি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার, মেয়েদের জন্য সাইকেল- এমন অনেক কিছু।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই বিজেপি ২৮২টি আসনে জিতে নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছিল। সেটিই ছিল প্রথমবারের মতো বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্তি।

মোদি সরকারের সময়ে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির কিছুটা গতি কমে গেছে। শস্যের দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষুব্ধ। বেকারত্ব চরম সীমায় পৌঁছেছে।

২০১৬ সালের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আর সার্ভিস ট্যাক্স ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। রফতানি আয় কমেছে। কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ঋণের দায়ে ডুবতে বসেছে। অথচ ভারতের জিডিপি অন্তত সাত শতাংশ হারে বাড়া প্রয়োজন।

নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, অর্থনীতিতে সংস্কারের কাজ চলছে। এ সংস্কার থেকে তিনি লাভ তুলতে পারবেন কিনা তা এ নির্বাচনে নির্ধারণ হবে।

মোদি সরকার সরাসরি কৃষকদের ঋণ বা ঋণ মওকুফ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পিছিয়ে পড়াদের জন্য চাকরিতে কোটার কথাও বলছেন তিনি।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (বায়ে) ও রাহুল গান্ধী/ছবি: সংগৃহীত



অন্যদিকে, ক্ষমতায় ফেরার আশা করছে কংগ্রেস। ১৩৩ বছরের ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন দল ২০১৪ সালের নির্বাচনে শোচনীয় হার মানতে হয়েছিল তাদের। মাত্র ৪৪টি আসন পেয়েছিল তারা। পরের চার বছরে অনেক রাজ্য নির্বাচনে হারলেও ২০১৮  এর ডিসেম্বরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে জয় পেয়েছে। তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেছেন। রাহুল গান্ধী তার দল জিতলে গরিবদের একটি ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন। মোদি হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন যা সমালোচনা ঊর্ধ্বে নয়। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর