কাশী বিশ্বনাথ মন্দির উদ্ধারে মোদির বিশাল কর্মযজ্ঞ

ভারত, আন্তর্জাতিক

খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 16:42:50

কাশী বিশ্বনাথের মন্দির প্রাঙ্গণ, বারানসি, উত্তর প্রদেশ থেকে: কাশী বিশ্বনাথের মন্দির উদ্ধারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশাল এক কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। গঙ্গা থেকে অর্ধ মাইল দূরে এ মন্দিরটিকে সরাসরি দর্শনে সামনে ছোট ছোট মন্দির অটু্ট রেখে সব কিছুকেই গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বারানসি নিয়ে এক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি এই বারানসি ১৮ বারের মতো পরিদর্শন করেছেন। এর মূল কারণ হলো- বারানসিকে বিশ্বের সর্বোত্তম আধ্যাত্মিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা।

নরেন্দ্র মোদি মনে করেন, বারানসিতে একটি অনন্য শহর হওয়ার জন্য সব উপাদান আছে। দেশটির আধ্যাত্মিক রাজধানী বলা হয় বারানসিকে। বড় একটি আদর্শ পর্যটক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে এক বিশাল পরিবর্তন দরকার। বারানসি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী এলাকা। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরকে উদ্ধার করতে তিনি ২০০ থেকে আড়াইশ’ বছর আগের সব ভবন ভেঙে ফেলছেন। শুধু পুরনো মন্দিরগুলো থাকবে সেখানে। যত আবাসিক ভবন, দোকান, ব্যাবসা বাণিজ্যের ভবন আছে, সব ভাঙা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই- গঙ্গা থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাশী বিশ্বনাথের মন্দির যেন সরাসরি দেখা যায়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/19/1555669502025.jpg

এ নিয়ে শত বছরের ব্যবসা হারাতে হয়েছে হাজার মানুষের। মোদি ও উত্তর প্রদেশের সরকার সবাইকেই ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। ক্ষোভ থাকলেও বারানসিকে সুন্দর করতে মোদির যে প্রচেষ্টা, তাতে সবাই সাধুবাদ জানাচ্ছেন।

হিন্দু পুরাণে এই মন্দিরটির উল্লেখ পাওয়া যায় বলে কথিত আছে। মন্দিরটি শৈব ধর্মের প্রধান কেন্দ্রগুলোর অন্যতম। অতীতে বহুবার এই মন্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত ও পুনর্নির্মিত হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/19/1555669481451.jpg

মন্দিরের পাশে জ্ঞানবাপী মসজিদ রয়েছে। আদি মন্দিরটি এই মসজিদের জায়গাটিতেই অবস্থিত ছিল বলে ধারণা করা হয়। মন্দির ও মসজিদ পাশাপাশি থাকায় এখানে যেন কোনোও উত্তেজনা না ছড়ায়, সেজন্য সর্বক্ষণ এ এলাকায় মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা কর্মী। বর্তমান মন্দিরটি ১৭৮০ সালে ইন্দোরের মহারানী অহিল্যা বাই হোলকর তৈরি করে দেন। ১৯৮৩ সাল থেকে উত্তর প্রদেশ সরকার মন্দিরটি পরিচালনা করে আসছে।

বারানসিকে আদর্শ শহর হিসেবে গড়ে তুলতে কতগুলো নীতির উপর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মোদি। এগুলো হলো- অপরূপ কাশী, প্রগতিশীল কাশী, সুরক্ষিত কাশী, সংগঠিত কাশী ও নির্মল বা বিশুদ্ধ কাশী এবং ঐক্যবদ্ধ কাশী।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রধানমন্ত্রী মোদি বারানসির কাছে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একটি সমৃদ্ধ পর্যটন শিল্প, যা ২৫ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার সব উপাদানই অনন্য শহরটিতে হতে চলেছে।

প্রতি বছর প্রায় ৬৫ লাখ পর্যটক বারানসি শহরে আসেন। শুধু মন্দির নয়, বারানাসি সিটি প্রকল্পের পুরোটাতেই মনোযোগ দেওয়া হয়েছে- এখনকার আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি, পরিচ্ছন্নতা, ট্র্যাফিক ব্যবস্থা।

বারানসি সিটির এই প্রস্তাবের আনুমানিক ব্যয় দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা, যা ঘাট, অবকাঠামো ও ই-গভর্নেন্সের আওতায় এনে পুনরায় নির্মাণে ব্যয় করা হবে। এলাকার বিকাশের জন্য আনুমানিক এক হাজার ৬৫৯ কোটি রুপি বাজেট ধরা হয়েছে। ৫০০ কোটির বেশি রুপি দেওয়া হয়েছে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ঘাট করিডর নির্মাণের জন্য। প্যান সিটি জন্য ৬১৮ কোটি রুপি বাজেট ধরা হয়েছে। ২০১৫ থেকে কাজ শুরু হয়েছে, যা শেষ হবে ২০২০ সালে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর