বাস্তব কখনো কখনো সিনেমাকেও হার মানায়। আবার সিনেমা থেকে শিক্ষা নিয়েও কেউ কেউ জীবনে তা প্রয়োগ করতে যান। তবে এক্ষেত্রে ঘটেছে দুটোই। সিনেমা দেখে জীবনে প্রয়োগ করতে যাওয়া বাস্তব হার মানিয়েছে সিনেমাকেই।
রহস্য গল্পে তৈরি সিনেমার মতো তাই মাংসের ঝোল চিনিয়ে দিল নকল 'স্বামী'কে। মাংসের ঝোলের সূত্র ধরেই খুলে গেল নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জট।
ভারতের তেলেঙ্গানার সুধারকর রেড্ডির (৩২) সঙ্গে তিন বছর আগে বিয়ে হয় স্বাতীর (২৭)। এই দম্পতির দুই সন্তানও রয়েছে।
পুলিশ জানায়, পেশায় নার্স স্বাতী সাইকোথেরাপিস্ট রাজেশের সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধার পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্বামী সুধাকর। তখনই প্রেমিক রাজেশের সঙ্গে মিলে স্বামী সুধাকরকে খুনের পরিকল্পনা করেন স্বাতী।
পুরোপুরি সিনেমার মতোই পরিকল্পনা করেন স্বাতী। চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর সুধাকরকে প্রথমে ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করেন স্বাতী। সুধাকর অজ্ঞান হয়ে পড়তেই তার মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে তাকে খুন করেন স্বাতী। এরপর জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে সুধাকরের মৃতদেহ পুড়িয়েও ফেলা হয়। কিন্তু শুধু সুধাকরকে খুন করলেই স্বাতীর কার্যসিদ্ধি হতো না। সুধাকরের সম্পত্তির প্রয়োজনও ছিল স্বাতী ও তার প্রেমিক রাজেশের।
তাই, পরিকল্পনা মত এরপর রাজেশের মুখে অ্যাসিড ঢেলে প্রেমিকের মুখ বিকৃত করে দেয় স্বাতী। সুধাকরের বাড়ির লোককে তিনি বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হামলায় আক্রান্ত হয়েছে সুধাকর। স্বাতীর পরিকল্পনা ছিল, অ্যাসিডে বিকৃত হয়ে যাওয়া রাজেশের মুখের প্লাস্টিক সার্জারি করে পরবর্তীতে তাকেই 'স্বামী' হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেওয়া। সেইমত নার্সিংহোমে ভর্তিও করা হয় গুরুতর আহত রাজেশকে।
কিন্তু হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ অন্য সব রোগীদের সঙ্গে রাজেশকেও মাংসের ঝোল খেতে দেওয়া হলে রাজেশ তা খেতে অস্বীকার করেন। সবাইকে চমকে দিয়ে রাজেশ হাসপাতাল কর্মীদের বলেন তিনি নিরামিশাষী।
এদিকে, স্বাতীর স্বামী সুধাকর ছিলেন আমিশাষী। এই ঘটনায় সুধাকরের বাড়ির লোকের মনে দানা বাঁধে সন্দেহ। এরপর সুধাকরের বাড়ির লোক সন্দেহ নিরসনে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে সুধাকররূপী রাজেশকে। কিন্তু সে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায়, কথা বলাই বন্ধ করে দেন রাজেশ।
সন্দেহ জোরালো হতেই পুলিশকে বিষয়টি জানায় সুধাকরের বাড়ির লোক। পুলিসের জেরার মুখে ভেঙে পড়ে স্বাতী। প্রেমিক রাজেশকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী সুধাকরকে খুনের কথা স্বীকার করেন তিনি।একইসঙ্গে জানান, সিনেমায় প্লাস্টিক সার্জারি করে মুখ বদলে দেওয়ার ঘটনা দেখেই প্রেমিককে স্বামী সাজানোর পরিকল্পনা করেন তিনি।