লোকসভা নির্বাচনে ‘চিনি’ ফ্যাক্টর

ভারত, আন্তর্জাতিক

খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 06:51:40

শুনতে অবাক লাগলেও এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘চিনি’। তাই তো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন উত্তর ভারতে নির্বাচনী প্রচারণায় যান, বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে, তখন তিনি চিনিকে অন্যতম প্রধান খাদ্য হিসেবে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে ভারতের অনেক অঞ্চলেই আখ চাষিরা সুগার মিলগুলোর কাছ থেকে পাওনা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন।

আর এ রাজ্যগুলো শাসন করে মোদির দল বিজেপি। যখন আখ চাষিরা বিক্ষোভ করে রেলপথ, সড়কপথ অবরোধ করেন, তখন মোদিকে বলতে হয়, 'আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আপনাদের পাই পাই করে পরিশোধ করা হবে'।

এ অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে চিনি রাজনীতি বিশাল ভূমিকা রাখছে। এটা অনেকটা ভোট ব্যাংকের মত কাজ করে। উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্র মিলে ভারতের মোট ৬০ শতাংশ চিনি উৎপাদন করে। আর লোকসভায় এ রাজ্য দু’টির মোট সংসদীয় আসন ১২৮।

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে প্রায় ১৫০টি আসনের ভোট চিনি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। তাই মহারাষ্ট্রের চিনি কমিশনার শেখর গায়কয়েড বলেন, ‘চিনি সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ফসল'।

ভারতের চিনি কলগুলো ৫০ লাখ আখ চাষির ১০০ কোটি ডলারের সমমূল্য বকেয়া রুপি পরিশোধ করতে পারছে না। অনেক সময় এ দেনা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকে। এদিকে, চিনিকলগুলোতে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে এক কোটি ২০ লাখ টন অবিক্রিত আখ।

অন্যদিকে, ভারতের চেয়ে বিশ্ব বাজারে চিনির দাম কম। ভারতে রাজনীতির কারণে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ব্রাজিলের চেয়ে আখ চাষিদের বেশি অর্থ দিতে হয়। আর এ অর্থ দিতে হয় জনগণের করের টাকায়। তাই ক্ষতি হলেও রাতারাতি চিনি উৎপাদন বন্ধ করাও যায় না।

চিনি ভারতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা। ভারতে প্রায় ৫২৫টি চিনি কলে মৌসুমের সময় তিন কোটি টন চিনি উৎপাদন হয়। ব্রাজিলের পর ভারতই সবচেয়ে বেশি চিনি উৎপাদন করে।

বড় বড় মিলগুলো একত্রিত হয়েও অনেক অঞ্চলে চিনি উৎপাদন করে। শুধু ৫০ লাখ চাষি নয়, এ খাতে কোটি মানুষ মিল ফ্যাক্টরি ও চিনি পণ্য বহনের সঙ্গে যুক্ত। ভারতে চিনির ভোক্তা রয়েছে প্রচুর। বিশেষ করে মিষ্টান্ন তৈরিতে অনেক চিনি প্রয়োজন হয়। কোমল পানীয় তৈরিতেও প্রচুর চিনি প্রয়োজন হয়। যদিও তা স্থুলতা সৃষ্টির জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর