চুক্তির দোরগোড়ায় পৌঁছানোর কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও শুরু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্যযুদ্ধ। এরমধ্যে চীনের পণ্যের উপর ২০০ বিলিয়ন ডলার কর আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পণ্যে আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্ক থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।
ফলে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশের মধ্যে বাণিজ্যক্ষেত্রে তীব্র সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্পের এমন ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার বাজারের সূচকে বড় ধরনের ধস নামে। ইউরোপীয় শেয়ার বাজারেও এর ধাক্কা লাগে। প্যারিস এবং জার্মানির ফ্র্যাঙ্কফুর্ট শেয়ার সূচকও প্রায় ২ শতাংশ নেমে যায়। ক্ষতির মুখে পড়ে গাড়ি নির্মাতারাসহ গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং স্টিল উৎপাদনকারীরা। চীনে হংকং হ্যাং সেন সূচক প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং সাংহাই কমপোজিট ৫ দশমিক ৬ শতাংশ নেমে যায়।
এদিকে চীনের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত কর আরোপে পাল্টা ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং। চীনের কাইয়ুয়ান রাজধানীর উপদেষ্টা কাউন্সিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রোক সিলভার্স জানিয়েছে, সামনের দিনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুক্রবার চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরেকটি আলোচনা কোন সমাধান ছাড়াই শেষ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ঘোষিত শুল্ক দিয়ে পণ্য নেয়ার বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। গত বছর বাণিজ্যচুক্তি চালু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ১১০ বিনিয়ন মার্কিন ডলার পণ্য রপ্তানি করেছে। যার লক্ষ্যমাত্রা এখন ১০ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিয়মিত কৃষি পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। সম্ভবত তারা এ ক্ষেত্রে শুল্ক দ্বিগুণ করতে পারে। আমি মনে করি এটি তাদের জন্য একটি ভারসাম্যমূলক কাজ। তারা রাজনৈতিক কারণে প্রতিশোধ নিতে চায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অর্থনৈতিক দিক থেকে চিন্তা তাদের বিকল্প এমন কিছু করার প্রয়োজন নেই।"
নতুন করে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে তার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতির উপর পড়বে বলে সতর্ক বার্তা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
আইএমএফ’র মতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে এই ধরণের অস্থিরতা সবার জন্যই হুমকি স্বরুপ। বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য দ্বন্দ্ব সমাধান করার আহ্বান জানায় আইএমএফ।
বাণিজ্য যুদ্ধ ইতিমধ্যেই আমেরিকান কৃষক এবং উভয় দেশের কিছু বড় কোম্পানির উপর প্রভাব ফেলেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে অ্যাপলের (এএপিএল) আংশিকভাবে রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে, এরজন্য বাণিজ্য যুদ্ধকে দায়ী করেছে তারা।
নির্মাণ সংস্থা ক্যাটারপিলার (সিএটি) জানিয়েছে, ২০১৮ সালের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার শুল্ক খরচ হয়েছে। চীনের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান আলিবাবার (বিএবিএ) মতো প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এমন পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করেছে।