মাউন্ট এভারেস্টে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলছে

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 18:28:19

আরও একজন পর্বতারোহী নিহত হলেন। এই নিয়ে ২০১৯ সালের প্রথম পাঁচ মাসে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে যেয়ে ১১ পর্বতারোহীর মৃত্যু হলো।

সোমবার (২৭ মে) যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এটর্নি ক্রিস্টোফার জন কালিশ (৬২) পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে যেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন নেপালের পর্যটন বিভাগের পরিচালক মিরা আচারিয়া।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিটি মাউন্ট এভারেস্টের ২৫ হাজার ফুট উচ্চতায় খুবই দক্ষতা ও সুস্থতার সঙ্গে আরোহ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

জনের মৃত্যুর খবরটি তার পরিবার মেনে নিতে পারেননি। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শোকাহত। গেল এপ্রিল মাসে জন ৬২ বছরে পা রাখেন। সে ছোট একটি দলের সঙ্গে খুবই সুন্দর আবহাওয়াতে এভারেস্ট জয়ের চেষ্টা করছিলেন। সে তার জীবনের শেষ সূর্যোদয়টি পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে বসেই দেখলেন। মাউন্ট এভারেস্টের মধ্য দিয়ে জন ‘সেভেন সামিট ক্লাব’ এর মেম্বার হলেন।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ৬৪ বছর বয়সী পর্বতারোহী আর্নেস্ট লেন্ডগ্রাফ নামের অস্ট্রিয়ান নাগরিক মৃত্যুবরণ করেন।

পর্বতারোহীরা বলছেন, 'বৈরি আবহাওয়া ও পর্বত আরোহের অভিজ্ঞতা কম থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।'

তবে ব্রিটিশ পর্বতারোহী রবিন হায়নেস মাউন্টে অতিরিক্ত ভিড়ের কথা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে বলেন, ‘মাউন্ট এভারেস্ট সামিটে একমাত্র রাস্তাটিতে অতিরিক্ত ভিড় লক্ষ্য করা যায় যা মারাত্মক বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’

জানা গেছে, গত ২০ মে মাউন্ট এভারেস্টের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের এক মাত্র রাস্তায় অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে পর্বতারোহীদের চূড়ার কিছু আগে লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় যেখানে পর্বতারোহীরা অপেক্ষা করছিলেন সেটা ‘ডেথ জোন’ বা মৃত্যু কূপ হিসেবেই বহুল পরিচিত। এই ‘ডেথ জোন’এ এক মিনিটও অক্সিজেন ছাড়া বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

পর্বতারোহীদের গাইড হিসেবে পরিচিত আদ্রাইন বালিংজার সিএনএনকে বলেন, ‘চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ’ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যারা এখানে আসেন তাদের অনেকেরই পর্বত আরোহ সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা নেই। এছাড়া ওইসব কোম্পানিগুলোও দায়ী যারা পর্বত বিজয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ‘অনভিজ্ঞ পর্বতারোহী ও কমার্শিয়াল কোম্পানিগুলোর জন্য পর্বতারোহীরা মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যা পরবর্তীতে এভারেস্টের উঁচু জায়গায় গিয়ে বাজে সিদ্ধান্ত মনে হয়। পরবর্তীতে সেটা অপ্রয়োজনীয় বিপদ ডেকে নিয়ে আসে।’

‘ডেথ জোন’ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চূড়ার ২৬ হাজার ফুট উপর থেকে ‘ডেথ জোন’ শুরু। সেখানে অক্সিজেন ও অতিরিক্ত অক্সিজেন থাকার পরও মাত্র কয়েক ঘণ্টা বেঁচে থাকা সম্ভব। তার মানে এই অবস্থায় আপনি যদি চূড়ার শেষ পর্যায়ে গিয়ে মানব সৃষ্ট জ্যামে পড়েন তাহলে ফলাফল সত্যিই গুরুতর হতে পারে।’

পর্বত আরোহী ডেভিড মোর্টোন সিএনএনকে বলেন, ‘মূল সমস্যা শুধু পর্বতারোহীদের নয় যারা তাদের উপরে উঠতে সহযোগিতা করেন তাদের মাঝেও সমস্যা রয়েছে। এভারেস্ট প্রাথমিকভাবে একটি ধাঁধার মতো। আমি মনে করি, যখন অনভিজ্ঞ পর্বত আরোহীদের সঙ্গে অনভিজ্ঞ অপারেটর থাকে সেটা আশঙ্কাজনক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর