দক্ষিণ কোরিয়ার দশ অজানা

বিবিধ, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-09-01 23:18:09

পূর্ব এশিয়াতে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়া ‘রিপাবলিক অফ কোরিয়া’ নামেই পরিচিত। ৫১ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে দেশটি বিশ্বের ২৭তম বৃহত্তম দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি নাক ইয়ন আজ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করাই তার এবারের সফরের লক্ষ্য।

তবে এই লেখার আয়োজনটা একটু ভিন্ন। দেশটির কে-পপ ও কোরিয়ান সিরিয়াল আমাদের দেশেও সমানভাবে জনপ্রিয় হলেও, দেশটি সম্পর্কে অনেক তথ্যই আছে অজানা। তেমন দশটি অজানা তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ফিচারটি।

১. প্রথমেই নাম দিয়ে শুরু করা যাক। দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে প্রচলিত তিনটি নাম বা নামের প্রথমাংশ হলো- কিম (Kim), লি (Lee) ও পার্ক (Park)। দেখা গেছে, দেশটির অন্ততপক্ষে ২০ শতাংশ মানুষের নাম কিম। এছাড়াও তাদের নাম লক্ষ করলে এই তিনটি নামের মাঝে কোন না কোন একটি অবশ্যই চোখে পড়বে। উদাহরণের জন্য খুব বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর নামটি খেয়াল করুন- লি নাক ইয়ন (Lee Nak-yeon).

২. দক্ষিণ কোরিয়ার পুরো জনসংখ্যার মাত্র ৩ শতাংশ ওবিস বা বাড়তি ওজনের অধিকারী। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষই ওবিস।

৩. মেকআপ মানেই সম্পূর্ণভাবে নারীদের অনুষঙ্গ। কিন্তু এই ধারণাটি দক্ষিণ কোরিয়াতে পাওয়া যাবে না। এই দেশটির অন্ততপক্ষে ২০ ভাগ পুরুষ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের মেকআপ পণ্য ব্যবহার করেন। হিসেব করে দেখা গেছে, যে পুরুষ প্রতিদিন মেকআপ পণ্য ব্যবহার করেন, তার পুরো বছরে মেকআপের পেছনে খরচ হয় প্রায় ৯০০ মার্কিন ডলার!

৪. জেনে বিস্মিত হবেন, দক্ষিণ কোরিয়ার এক-তৃতীয়াংশ নারীই অন্ততপক্ষে একবারের জন্য হলেও সৌন্দর্য বৃদ্ধি উপলক্ষ্যে ছুরি-কাঁচির নিচে নিজের চেহারা সমর্পন করেছে তথা প্লাস্টিক সার্জারি করেছে! আরও মজার বিষয় হলো, এটা মোটেও অপ্রচলিত কোন বিষয় নয়, বরং খুবই সাধারণ একটি প্রথা। এমনকি প্লাস্টিক সার্জারিকে খুব ভালোভাবেই এই দেশে গ্রহণ করা হয় ও এটা করার জন্য সবাইকে অনুপ্রাণিত করা হয়।

৫. মেকআপের কথা তো উপরে বলা হলো, এবারে জানুন দক্ষিণ কোরিয়ার কে-বিউটি সম্পর্কে। দেশটির নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার ত্বক অবিশ্বাস্য রকম সুন্দর। এর পেছনের কারণ হলো এই কে-বিউটি। তারা একেবারেই তাদের নিজস্ব বিউটি ব্র্যান্ডের পণ্য ও টেকনিক ব্যবহার করে ত্বকের পরিচর্যায়। যার মাঝে একটি হল- স্নেইল (শামুক) ফেস ম্যাসাজ। যা ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার পর বেশ শোরগোল পড়ে যায়। এবারে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন তাদের সৌন্দর্যের রহস্য।

৬. দেশটিতে মদ ও মদ্যপান সম্পূর্ণ বৈধ। পাবলিক প্লেসে, সবার সামনে প্রকাশ্যে মদ্যপান করা যাবে, ক্যানড মদ কিনে বাড়ি ফেরা যাবে- এতে কোন বাধা নেই। দক্ষিণ কোরিয়ায় মদ্যপানের বহু পুরনো ও প্রাচীন অভ্যাস। সজু (Soju) হলো দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় মদ্যজাতীয় পানীয়।

৭. কোরিয়ানদের মাঝে শুকর, গরু ও মুরগির মাংস খাওয়ার প্রচলনের পাশপাশি কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রচলনও আছে। যদিও কোরিয়ার সকল প্রদেশে কুকুরের মাংস খাওয়া হয় না, কিন্তু এটা খাওয়া নিষিদ্ধও না।

৮. বিশাল পরিধির (৩৮,৬৯০ স্কয়ার মাইলস) এই দেশটিতে রয়েছে হাজারো বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতি। যার ফলে সময়ের হাত হাত ধরে গড়ে উঠেছে দেশটির বিভিন্ন দর্শনিয় স্থান। এখানে দারুণ একটা বিষয় হলো, দক্ষিণ কোরিয়ায় আছে ১২টি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। যার মধ্যে আছে চ্যাংডিওকগাং প্যালেস কমপ্লেক্স, জেভ্যু ভলকানিক আইল্যান্ড, লাভা টিউবস, দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী গ্রাম হাহোয়ে ও ইয়াংডং।

৯. দক্ষিণ কোরিয়াতে টানা ১৪ দিন ধরে বরিইয়ংয়ে পালন করা হয় বাৎসরিক মাড ফেস্টিভ্যাল। সাধারণত জুলাইয়ের প্রথম সাপ্তাহিক ছুটি থেকে দ্বিতীয় সাপ্তাহিক ছুটি পর্যন্ত চলে এই উৎসব।

১০. কোরিয়ানদের নাম দিয়ে শুরু করা হয়েছিল, শেষও হোক নাম দিয়েই। নবজাতকদের নাম নির্ধারণের জন্য ৬০ শতাংশ দক্ষিণ কোরিয়ান পরিবার প্রফেশনালদের দ্বারস্থ হন। অর্থাৎ শিশুর নাম রাখার জন্য অর্থের বিনিময়ে প্রফেশনাল মানুষদের সাহায্য নিয়ে তবেই নাম ঠিক করেন।

 

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর