আজ ১৯ মে, ১৯৬১ সালে আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলনের রক্তঝরা দিন। ভাষা শহীদদের অম্লান স্মৃতি নিয়ে দিনটি আজ আবার ফিরে এসেছে। যেদিন আরো ১১ জনের সঙ্গে পৃথিবীর প্রথম নারী ভাষা শহীদ সতের বছরের তরুণী কমলা ভট্টাচার্যও আত্মনিবেদন করেন।
বাংলাদেশের বাহান্নর ভাষাচেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে ১৯৬১ সালের মে মাসে বাংলা ভাষার ব্যবহার বন্ধ করার প্রতিবাদে ভারতের আসামের শিলচর শহরে আন্দোলন তৈরি হয়। যে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন এগারো জন ভাষাশহীদ।
আসাম রাজ্যর প্রধান ভাষা অহমীয়া হলে বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ, কাছাড় এবং শিলচর হলো বাঙালিদের জনপদ। দেশবিভাগের একবছর পর ১৯৪৮ সালে রেফারেন্ডামের মাধ্যমে সুরমা ভ্যালি (বর্তমান সিলেট বিভাগ) পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশের) অন্তর্ভুক্ত হয় । কিন্তু বৃহত্তর সিলেটের তিন চতুর্থাংশ নিয়ে বরাক ভ্যালি থেকে যায় আসামে ।
১৯৬১ সালে আসাম প্রাদেশিক সরকার শুধু অহমীয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র সরকারি ভাষা ঘোষণা দিলে ক্ষোভ দানা বাঁধে বাঙালিদের ভেতর। ক্রমশ তা রূপ নেয় আন্দোলনে। প্রথমে সত্যাগ্রহ, পরে সহিংস।
আসামে সেদিন শহীদ কমলা ভট্টাচার্য, শহীদ শচীন্দ্র পাল, শহীদ বীরেন্দ্র সূত্রধর, শহীদ কানাইলাল নিয়োগী, শহীদ চন্ডিচরন সূত্রধর, শহীদ সত্যেন্দ্র দেব, শহীদ হীতেশ বিশ্বাস, শহীদ কুমুদরঞ্জন দাস, শহীদ তারিণী দেবনাথ, শহীদ সুনীল সরকার, শহীদ সুকুমার পুরকায়স্থ প্রাণ নিবেদন করেন।
সেদিন মাতৃভাষার জন্য যে ১১ জন বীর শহীদ আত্মবলি দেন তাদের মধ্যে ছিলেন পৃথিবীর প্রথম নারী ভাষাশহীদ সতের বছরের তরুণী কমলা ভট্টাচার্য। পৃথিবীর ইতিহাসে মাত্র দুজন নারী মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। একজন শহীদ কমলা ভট্টাচার্য, দ্বিতীয় জন শহীদ সুদেষ্ণা সিংহ, যিনি বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার স্বীকৃতির আন্দোলনে শহীদ।
আসামে ১৯ মে এখনও ভাষাদিবস পালন করা হয়।