ভেনিজুয়েলায় বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাদুরোর জয়

, আন্তর্জাতিক

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক | 2023-08-26 17:13:57

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বিরোধীদের বয়কট ও ভোট কারচুপির অভিযোগের মধ্যেই দ্বিতীয় মেয়াদে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় বিভিন্ন দেশ প্রতিবাদ জানিয়েছে।

গত রোববার ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি ফলাফলে মাদুরো ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ২১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন ফ্যালকন। তবে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন বিরোধী প্রার্থীরা। তাঁরা চলতি বছরের আরও পরের দিকে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হওয়ায় ভেনেজুয়েলার সরকারকে নিন্দাও জানিয়েছে।

মাদুরোর জয়ের প্রতিক্রিয়ায় আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও কানাডাসহ ১৪টি দেশ কারাকাস থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে বলে খবর বিবিসির।

রোববারের নির্বাচনের পর দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ঘাটতিতে থাকা ভেনেজুয়েলায় এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দানের হারও খুব কম ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ওপর ‘দমনপীড়ন বন্ধে’ নতুন নির্বাচন দিতে মাদুরেরা প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এর বিপরীতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্বিতীয় মেয়াদে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় মাদুরোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

‘ভেনেজুয়েলা যেসব সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি, সেগুলোর সমাধানে’ মাদুরো সফল হবেন বলেও প্রত্যাশা জানিয়েছেন তিনি।

ভেনেজুয়েলার প্রয়াত বামপন্থী নেতা হুগো চাভেজের উত্তরসূরি মাদুরো ২০১৩ সাল থেকে একসময়কার তেলসমৃদ্ধ দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। উচ্চমাত্রায় মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও ওষুধসংকট, অপরাধ বেড়ে যাওয়া, বিশুদ্ধ পানিসংকট, বিদ্যুতের ঘাটতি ও যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দেশটিতে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে মাদুরোর জনপ্রিয়তা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে।

এবারের নির্বাচনে ৯০ শতাংশ ভোট গণনা শেষে মাদুরো ৫৮ লাখ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন বলে দেশটির ন্যাশনাল ইলেকটোরাল কাউন্সিল (সিএনই) জানিয়েছে; যা মোট ভোটের ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হেনরি ফ্যালকন পেয়েছেন ২১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট, অর্থাৎ ১৮ লাখ মানুষের সমর্থন।

ভোটের আগেই যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বেশ কয়েকটি লাতিন দেশ জানিয়েছিল, এ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিবে না তারা।

নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর মেক্সিকো, কলম্বিয়া, চিলি, পানামা ও পেরু কারাকাসের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে বলে খবর বিবিসির।

তবে পশ্চিমাদের দিক থেকে চাপের মুখে পড়লেও মাদুরোর প্রতি সমর্থন অব্যাহত আছে চীন, রাশিয়া, এল সালভাদর ও কিউবার মতো মিত্রদেশগুলোর। ভেনেজুয়েলার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দনও জানিয়েছে তারা।

ভেনেজুয়োর সব দলকে ‘জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা’ দেখাতে আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।

এ সম্পর্কিত আরও খবর