ইতিহাস গড়লেন কিম!

, আন্তর্জাতিক

ড. মাহফুজ পারভেজ | 2023-08-25 03:48:59

নিঃশব্দে ইতিহাস তৈরি হয়ে গেল এশিয়ার অতি উতপ্ত অঞ্চলে। এক যুগান্তকারী সমঝোতায় দুই কোরিয়া সিদ্ধান্ত নিল, আর পারস্পরিক বৈরীতা নয়, এবার শুধু শান্তি আর সৌহার্দ্য!

আন্তর্জাতিক রাজনীতি যে কোরিয়াকে করেছিল বিভক্ত ও মুখোমুখি, সেই উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া চলে এলো অনেকটাই কাছাকাছি। রক্তের দীর্ঘ অতীত পেরিয়ে সেখানে দেখা দিয়েছে শান্তির রজত-শুভ্র নয়া দিগন্ত।

উত্তর কোরিয়ার যে সর্বাধিনায়ক কিমকে সবার কাছে মনে হচ্ছিল মানব নন দানব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাগলা ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নাম দিয়েছিলেন 'মিস্টার রকেট-ম্যান'। কিম প্রায় রোজই হুঙ্কার ছাড়ছিলেন, পারমাণবিক ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে তিনি আমেরিকার সাড়ে সব্বোনাশ করবেনই করবেন। ওয়াশিংটনও তাঁর হুঙ্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছিল। বেশ একটা সাজ সাজ রব পড়ে গিয়েছিল মার্কিন মুলুকেও।

চকিতে কিম যেন বদলে গেলেন। আর তিনি কারও সঙ্গে যুদ্ধ করবেন না এবং গোটা কোরিয়ান পেনিনসুলাকে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার লক্ষ্যে অবিচল থাকবেন। সংঘাতের গর্ভ থেকে শান্তির মুক্তো ছেনে আনার অসম্ভবকে সম্ভবপর করলেন কিম। ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি। গড়লেন বিশ্ব রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়।

কোরিয়ায় আরও একবার প্রমাণিত হল প্রতিবেশীর পারস্পরিক বিসংবাদ চিরস্থায়ী হয় না। ইতিহাসের অমোঘ নির্দেশ সেই দিকেই। ইউরোপ যেমন বৈরীতা ভুলেছে, তেমনি বিবাদ ভুলে গেলো দূরপ্রাচ্যের কোরিয়া।

ব্যতিক্রম হয়ে আছে কেবল মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশ। উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা ও বিবাদের সূচনা ১৯৪৫-৪৭ সময়কালে। দেখতে দেখতে কত রক্ত ঝরলো। মানুষ মরলো। যুদ্ধ আর সংঘাত হলো উভয় অঞ্চলেই। সুদীর্ঘ ৭১ বছর হতে চলল আত্মঘাতী লড়াই। থামার কোনও লক্ষণ নেই।

এখন বুঝি ভাবার সময় এসেছে, হতভাগা মধ্যপ্রাচ্য আর দক্ষিণ এশিয়ায় একজন কিম জংও জন্মায় না কেন?

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর