দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবন্দরে নয় মাস আটক থাকার পর উচ্চ আদালতের রায়ে অবশেষে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পেরেছে অ্যাঙ্গোলা থেকে আসা একটি পরিবার।
অ্যাঙ্গোলাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর নকিকা লুলেন্দো তার পরিবার নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসেন। তবে সিউলের ইনচিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ‘অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য’ থাকার সন্দেহে পরিবারটির অভিবাসন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করতে না পেরে তখন থেকে পরিবারটি বিমানবন্দরে আটকা পড়ে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
গত জুনে এক টিভি সাক্ষাৎকারে ভুক্তভোগী নকিকা লুলেন্দো জানান, অ্যাঙ্গোলাতে তিনি একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার হিসাবে কাজ করছিলেন। একদিন যখন তার গাড়িটি একটি পুলিশ জিপে ধাক্কা মারে, পথচারীদের বাঁচাতে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে আটক করে।
তিনি অভিযোগ করেন, তারা (পুলিশ) আমাকে বিনা বিচারে ঘটনাস্থলে আটক করে কারাগারে রেখেছিল। ১০ দিন আমাকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে। তখন আমার সাথে অনেক দুর্ব্যবহার এবং আমাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছিল। যেদিন আমি কারাগার থেকে মুক্তি পাই সেদিন পুলিশ বাড়িতে গিয়ে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
নকিকা লুলেন্দো বলেন, আমাদের কোরিয়ায় আসার কোন ইচ্ছা ছিল না। অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ হওয়ায় অ্যাঙ্গোলার স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করে আসছিলো। এ কারণে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছি।
এদিকে ভুক্তভোগী লুলেন্দো পরিবারটির প্রতিনিধিত্ব করেন আইনজীবী লি সান-হুন। তিনি জানান, অ্যাঙ্গোলান পরিবারটির পক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ আদালতের রায়, নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। যা অভিবাসন কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিল।
তিনি বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আদালত পরিবারটির শরণার্থী আবেদন বিবেচনা করে তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আমরা আশা করি, এই রায় আশ্রয় প্রার্থীদের সম্পর্কে সমাজের ভ্রান্ত ধারণাকেও বদলে দেবে।