সিরিয়ার উত্তর সীমান্তে তুরস্কের আগ্রাসন ঠেকাতে কুর্দিদের সেনা সহায়তা পাঠাবে সিরিয়া সরকার। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে একটি সঝোতায় পৌঁছেছে কুর্দি বাহিনী। ইতোমধ্যেই উত্তরাঞ্চলে সেনা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো।
উত্তর সিরিয়ার কুর্দি নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের এক বিবৃতিতে থেকে জানা যায়, সীমান্ত অঞ্চলে তুরস্ক নেতৃত্বাধীন দখলকৃত শহরগুলো পুনরায় উদ্ধারে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও কুর্দি বাহিনী একসঙ্গে কাজ করবে। এ জন্য দুই বাহিনী সমঝোতায় পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের (এসডিএফ) প্রধান মজলুম আবদী ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে বলেছেন, আসাদ সরকারের সঙ্গে চুক্তিটি একটি মারাত্মক আপস। সত্য কথা বলতে তাদের ওপর আস্থা রাখা বোকামি এবং তাদের বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু আমাদের মানুষদের গণহত্যা থেকে বাঁচাতে আমরা যেকোন আপসে যেতে রাজি।
রোববার (১৪ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব মাইক এস্পার সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবশিষ্ট থাকা এক হাজার মার্কিন সেনা সদস্যদের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে রোববার টুইটারে এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, পরিবর্তনের জন্য যুদ্ধে জড়িত হওয়া বোকামি। আর মধ্য প্রাচ্যের সংঘর্ষে জড়িত হওয়া আমাদের ভুল ছিল।
সিরিয়ার যেসব অঞ্চলে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেট বাহিনী (এসডিএফ) রয়েছে সেসব অঞ্চলে তীব্র হামলা করছে তুর্কি বাহিনী এবং তারা দুটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহর দখল করেছে। হামলায় দুই পক্ষের যোদ্ধা এবং কিছু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।
এছাড়া রোববার কুর্দিরা জানান, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের হামলার ফলে আন ইসা ক্যাম্প থেকে প্রায় আটশ আইএস জঙ্গি পালিয়েছে। আর হামলা চলতে থাকলে তারা আইএসদের মুক্ত করে দেবে।
এর আগে আইএস জঙ্গি দমনে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছে কুর্দিরা। কিন্তু সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর থেকে কুর্দিদের ওপর হামলা চালায় তুর্কি বাহিনী। তুরস্কের মতে, কুর্দিরাও জঙ্গি সংগঠন।
আর রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরোদোগান বলেন, তারা সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ২১টি গ্রাম দখল করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেহ সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করছে না তুরস্ক।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কুর্দি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা থেকে এরই মধ্যে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে। তবে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দি প্রশাসন বলছে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি। আর সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে তুরস্কের হামলায় ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১০০ জন কুর্দিবাহিনীর সদস্যা মারা গেছেন।