এনআরসি জটিলতায় আটকে আছে মরদেহ

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-04-28 12:39:20

ভারতের আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) যে তালিকা করা হয়েছে তাতে বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। ফলে তাদের গায়ে লেগে রয়েছে বিদেশি তকমা। কিন্তু বাদ পড়ারা তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবে বলে জানিয়ে আসছে ভারতীয় সরকার।

এনআরসির তালিকায় নাম না আসা এক ব্যক্তির নাম দুলাল চন্দ্র পাল(৬৫)। তিনি আসাম রাজ্যের সোনিতপুর জেলার আলিসিংগা গ্রামের বাসিন্দা। দুর্ভাগ্যবশত নিজেকে ভারতীয় প্রমাণের আগে মারা যান তিনি। গত ১২ অক্টোবর (শনিবার) আসামের তেজপুর ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত্যু হয় তার।

তবে মৃত্যুর পাঁচ দিন পরও দুলাল পালের মরদেহ পড়ে আছে গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজের হিমঘরে। মরদেহটি নিতে আসছে না কেউ। এমনকি সরকারিভাবে মরদেহ হস্তান্তর করতে চাইলেও নিতে অস্বীকৃতি জানান দুলাল পালের পরিবার।

তাদের দাবি, ভারতীয় নাগরিক বলে ঘোষণা না করা পর্যন্ত তারা মরদেহ নেবেন না। মরদেহকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।

ছবি সংগৃহীত

 

এ বিষয়ে দুলাল পালের বড় ছেলে আশিস ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘রাজ্য সরকার যেহেতু আমার বাবাকে বিদেশি বলে ঘোষণা করেছে, তাই তার দেহ বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। যদি রাজ্য সরকার তাকে ভারতীয় ঘোষণা করে তাহলে আমরা মরদেহ নিতে রাজি আছি।’

এদিকে, পরিবারের সদস্যদের এবং গ্রামবাসীদের দুলালের মরদেহটি গ্রহণে জন্য চার দিন ধরে তার গ্রামে বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার।

এ বিষয়ে সনিতপুরের জেলা প্রসাশক মনবেন্দ্র প্রতাপ সিং ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘এনআরসির তথ্য মতে সে (দুলাল চন্দ্র পাল) বিদেশি। নাগরিক পঞ্জিতে তার নাম নেই। এ বিষয়ে পরিবারের দাবি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ প্রশাসনের নেই। তারা যদি উচ্চ আদালতে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়, তাহলে আমরা আইনি সহায়তা দিতে পারি।’

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ১১ অক্টোবর দুলাল পাল ডায়াবেটিস এবং মানসিক রোগের জন্য চিকিৎসা নিতে তেজপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যান এবং একই দিনে তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নেওয়া হয়। ১২ অক্টোবর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এরপর কারা কর্তৃপক্ষ তার দেহটি তার গ্রামে নিয়ে যায়। আর তাদের সঙ্গে একটি ফরম থাকে। যেখানে তাকে বিদেশি বলে উল্লেখ করা হয় এবং তার বাড়ির ঠিকানার কলামটি খালি রাখা হয়।

এ নিয়ে তার পরিবার ও গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে তার ছেলে আশিস বলেন, ‘তারা আমার বাবার ঠিকানা ঠিকই জানে। কিন্তু কেন বাবার বাড়ির ঠিকানার কলামটি খালি রাখা হল।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর