চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে জাতিসংঘ। আর এ কারণে বিশ্বের স্বাধীন জাতিসমূহের সর্ববৃহৎ এই সংগঠনটির সদর দফতর দুই দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক টুইট বার্তায় সংস্থাটি জানায়, চলমান অর্থ সংকটের কারণে নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়টি ১৯ ও ২০ অক্টোবর বন্ধ থাকবে।
টুইট বার্তায় সদস্য দেশগুলোর প্রতি একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলা হয়, আপনার দেশ কি এখনও জাতিসংঘের নিয়মিত বাজেটের অর্থ প্রদান করেছে?
জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর চাঁদার ওপর নির্ভরশীল। রাষ্ট্রগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের চাঁদা না দেওয়ায় তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে সংস্থাটি। গত ১০ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সদস্য দেশগুলি ২০১৯ সালে মোট ব্যয়ের মাত্র ৭০ শতাংশ দিয়েছে। ফলে ২৩ কোটি ডলারের আর্থিক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, ২০১৮-১৯ সালের জাতিসংঘের মোট অপারেটিং বাজেটের পরিমাণ ছিল ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শান্তিরক্ষা মিশনের খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়।
১৯৩টি দেশের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ১২৮টি। সংস্থাটিকে আর্থিকভাবে সাহায্যকারী দেশগুলোর শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবছর সংস্থাটির রাজনৈতিক, মানবিক ও সামাজিক যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২২ শতাংশ (প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা) অর্থই জমা পড়ে ওয়াশিংটনের অর্থসাহায্য থেকে।
কিন্তু এবছর যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা অর্থ তহবিল এখন পর্যন্ত পরিশোধ করেনি বলে জানিয়েছেন মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। পাশাপাশি অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোও প্রতিশ্রুত অর্থ তহবিলে জমা দেয়নি বলেও জানান তিনি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আরও জানান, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, চলতি মাসের শেষ থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজকর্ম। এমনকি আগামী নভেম্বর মাসে জাতিসংঘের সচিবালয়ের প্রায় ৩০ হাজার কর্মী বেতন পাবেন কি না, তা নিয়েও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, এই বিপুল ঘাটতির প্রেক্ষাপটে বেশকিছু কাজকর্মে কাটছাঁট করার কথা ভাবছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে রয়েছে সম্মেলন ও বৈঠকের সংখ্যা কমানো। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের সফরের ওপরেও বিশেষ কড়াকড়ির কথা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। সূত্রঃ এনডিটিভি