অস্ত্র হাতে নামাজে খুতবা দেওয়া হয় ইরানে

, আন্তর্জাতিক

মায়াবতী মৃন্ময়ী, অতিথি লেখক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 17:14:37

জুমা কিংবা ঈদের নামাজে ইমাম সাহেব খুতবা দিয়ে থাকেন। খুতবা আরবি শব্দ। যার অর্থ বক্তব্য। অস্ত্র হাতে নামাজে খুতবা দেওয়া হয় ইরানে। বিশ্বে সম্ভবত ইরানই একমাত্র দেশ, যেখানে এমনটি ঘটে, যা সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এবারের ঈদেও অস্ত্র হাতে নামাজে খুতবা দেওয়ার ব্যত্যয় ঘটে নি ইরানে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ উজমা খামেনেয়ি তেহরানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের খুতবা দিয়েছিলেন রাইফেল হাতে নিয়ে।

ঈদের নামাজের খুতবার সময় রাইফেল সঙ্গে রাখা নিয়ে অনেকেই নানা রকম মন্তব্য করেছেন। কিন্তু ইরানি স্কলাররা দাবি করেন যে, অস্ত্র হাতে খুতবা দেয়া রাসুল (সা.)-এর সুন্নাত। রাসুল (সা.) যুদ্ধাবস্থায় তলোয়ার নিয়ে, শান্তি অবস্থায় লাঠি নিয়ে খুতবা দিতে দাঁড়াতেন। তবে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতেন সর্বাবস্থায়। তখন খুতবায় তলোয়ার ব্যবহার হতো, আর এখন কালাশনিকভ রাইফেল। এ মন্তব্য ইরানের ধর্মীয় পণ্ডিতদের।

শুধু ঈদের জামাতই নয়, জুমা কিংবা অন্যান্য নামাজের সময় ইরানের ইমামরা মাঝে মধ্যেই এই অস্ত্র হাতে খুতবা দেন। এটি কেবল মাত্র সর্বোচ্চ নেতার ক্ষেত্রেই নয়, সাধারণ ইমামদের বেলায়ও লক্ষ্য করা গেছে।

ইরান মনে করে তারা যুদ্ধাবস্থায় আছে। ফলে একটি ইসলামী বিপ্লবের দেশে অস্ত্র হাতে খুতবা দিয়ে শত্রুদের এটা জানানো হয় যে, তারাও প্রস্তুত। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে তারা আমেরিকা-ইউরোপ-ইসরাইল ও তাদের মিত্রদের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ, সন্ত্রাস, অবরোধসহ নানা ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দেশটি মনে করে। এসব মোকাবেলায় ইরানও প্রতিরোধের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, তা জানানোর উদাহরণ হলো অস্ত্র হাতে নামাজের খুতবা প্রদান।

এদিকে ইরানের ওপর নতুন করে মার্কিন অবরোধ এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে ট্রাম্পের ভূমিকার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্ট। ফলে তাদের হাতে তসবিহ ও লাঠির পাশাপাশি কালাশনিকভের মতো সর্বাধুনিক অস্ত্রও শোভা পায় নামাজের খুতবার মতো জনসমাবেশে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনগণে সাহস, ঐক্য ও লড়াকু মনোভাব চাঙ্গা রাখতেই নামাজের খুতবায় অস্ত্রের এই প্রতীকী ব্যবহার করা হচ্ছে ইরানে

এ সম্পর্কিত আরও খবর