ক্রীতদাস প্রথার ইতিহাস অতি প্রাচীন। বিশ্বব্যাপী প্রথাটি নিষিদ্ধ হলেও মধ্যপ্রাচ্যে এখনো এর প্রভাব দেখা যায়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
বিবিসির প্রতিবেদনে অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে এখনো ক্রীতদাস প্রথা রয়েছে। দেশটির সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা হয় ক্রীতদাসদের।
তাদের তথ্য মতে, আফ্রিকার দেশ গিনি থেকে আনা ১৬ বছরের মেয়েকে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক কুয়েতি নারী বিজ্ঞাপন দেন। আর তারা ইনস্টাগ্রামসহ গুগল এবং অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে ক্রীতদাসদের বিক্রি করার জন্য কিছু অ্যাপস খুঁজে পেয়েছে। যেখানে নারী কর্মীদেরও বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। আর ক্রীতদাসদের বিক্রি করা হয় 'মেইড ফর ট্রান্সফার' ও 'মেইড ফর সেল' অ্যাপসে।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিবিসির এই প্রতিবেদনের পর নড়েচড়ে বসেছে কুয়েত সরকার।
দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করেছে এবং গৃহকর্মীদের দাস হিসেবে বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযুক্তদের আনুষ্ঠানিকভাবে তলব করা হয়েছে। এছাড়া এই কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এমন কাজ আর করবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞাপন দাতারা। এর জন্য তারা একটি প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে বলে জানায় কুয়েত সরকার। তবে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক পুলিশ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে ফেসবুক থেকে বলা হয়, তারা ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে অনলাইন দাস বাজারের যেসব কন্টেন্ট ছিল তা সব বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা না ঘটে সে জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
কুয়েতের জনশক্তি কর্তৃপক্ষের প্রধান ডা. মোবারক আল-আজমি বলেন, বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী অ্যাপের মাধ্যমে আফ্রিকার দেশ গিনির ১৬ বছরের মেয়েকে বিক্রি করার জন্য যিনি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, সেই নারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আমেরিকার আন্তর্জাতিক আইনজীবী কিম্বার মোটলি বলেন, ‘অ্যাপল এবং গুগলসহ যেসব প্রতিষ্ঠান অ্যাপগুলো তৈরি করেছে তাদেরকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর অ্যাপল স্টোরে যে সমস্ত অ্যাপ পাওয়া যায় তার দায়বদ্ধতা তাদেরকেই নিতে হবে।
এদিকে, গুগল এবং অ্যাপল থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধ কার্যকলাপ রোধ করতে তারা অ্যাপ ডেভেলপারদের সঙ্গে কাজ করছে।