মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ঘাঁটিতেই সৈন্যদের ভোট নিতে চায়

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-19 08:16:24

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সৈন্যদের জন্য স্থাপিত ভোট কেন্দ্রগুলো সেনা ঘাঁটি থেকে সরানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। সেনাবাহিনী বলছে, সেনা ঘাঁটির বাইরে সৈন্যরা ভোট দিতে গেলে, তাদের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়তে পারে।

সম্প্রতি মিয়ানমারের আইন সভার দুই কক্ষের কাছে জমা দেওয়া একটি বিলে সামরিক শিবিরের ভেতর থেকে ভোট কেন্দ্রগুলো স্থানান্তর করার চেষ্টা করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, সামরিক সুরক্ষা বিবেচনা করে, বিশেষত সংঘর্ষের শঙ্কা রয়েছে এমন অঞ্চলে ভোটকেন্দ্রগুলোর পোলিং বুথ বাইরে নেওয়ার বিলের বিরোধিতা করছি আমরা। সামরিক ঘাঁটির বাইরে কোনও নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে সৈন্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, যে সামরিক ঘাঁটিগুলো বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের গ্রামগুলো থেকে দূরে অবস্থিত, সেখানে যেসব সেনা ভোট দেবে, তাদের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ।

তবে সেনাবাহিনী ইস্যুতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন (ইউইসি) যে নির্দেশ দেবে, তা অনুসরণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন।

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে যে ২০২০ সালে ৯৫টি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
সু চির নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন এনএলডি ৫৯ শতাংশ আসন এবং ২৫ শতাংশ সেনা প্রতিনিধিদের হাতে রয়েছে। অন্যান্য দল ১৬ শতাংশ আসন ধরে রেখেছে।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছে, ঘাঁটিতে সেনারা ভোট দিলে নির্বাচন স্বচ্ছতায় প্রভাব পড়তে পারে।

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলটি বলেছে, সামরিক সেনানিবাসগুলোতে আসন্ন ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য ভোট কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টিতে তাদের আপত্তি রয়েছে। তাদের দাবি, এটি সামরিক ভোটারদের ভোটদানের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করবে।

২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে অনেক নির্বাচন কেন্দ্রে সামরিক কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ঊর্ধ্বতনদের নজরদারিতে সামরিক সেনানিবাসে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তাজনিত কারণে সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যে এবং সেনা কর্মীরা যে জায়গাগুলোতে বাস করে, সেসব স্থানের মধ্যে পোলিং স্টেশন সীমাবদ্ধ।

কিছু রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকদের মতে, ঊর্ধ্বতনরা সেনা সদস্যদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য করেছিল। কিছু ক্ষেত্রে সেনা সদস্যদের ভোট ঊর্ধ্বতনরাই দিয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার আগে পূরণ করে রাখা ব্যালট পেয়েছিল।

এনএলডি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইউ ন্যান উইন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিগত নির্বাচনে সামরিক সেনানিবাসে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে আমাদের দল একই রকম আপত্তি করেছিল। আমরা চাই, সবাই সুষ্ঠুভাবে ভোট দেবে। আমরা ব্যারাকের মধ্যে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের সঙ্গে একমত নই। এনএলডি আগামী বছরের নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনী আইনগুলো পর্যালোচনা করতে বলেছে।

বর্তমান নির্বাচনী আইনের অধীনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ৩শ জন ভোটারের ভোট দেওয়ার অনুমতি রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর