ক্যানসারের কাছে হেরে যেতে হয় বেশিরভাগ রোগীকেই। এ কারণেই ক্যানসারকে বলা হয় মরণব্যাধি। ক্যানসার প্রতিরোধে নেই কোন প্রতিষেধক। এমন কোন চিকিৎসা পদ্ধতিও আবিষ্কৃত হয়নি যা ক্যানসার কোষকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেবে। ফলে ক্যানসার এখনও এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম।
তবে প্রতিদিনের নতুন নতুন আবিষ্কার চিকিৎসাক্ষেত্রে আলো দেখাচ্ছে একটু একটু করে। সেই আশার আলোতে নতুন রশ্মি হিসেবে যোগ হতে যাচ্ছে কাওপক্স (Cowpox) ভাইরাস। বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ভাইরাস বেসড কাওপক্স এখনও পর্যন্ত জানা সকল ধরনের ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করবে বলে দাবি করা হচ্ছে।
সিএফ৩৩ (CF33) নামক এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি ইঁদুরের টিউমারকে সংকুচিত করেছে, যা থেকে আশা করা হচ্ছে মানুষের শরীরেও এই পদ্ধতিটি কার্যকর হবে। আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ার ব্রেস্ট ক্যানসার ও অন্যান্য ক্যানসার রোগীদের উপর ট্রায়ালের ভিত্তিতে এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞ প্রফেসর ইউম্যান ফং এর উদ্ভাবিত এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি অস্ট্রেলিয়ান বায়োটেক প্রতিষ্ঠান ইম্যুজেন এর মাধ্যমে ডেভেলপ করা হয়েছে এবং এই উদ্ভাবনের লাইসেন্সও রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই চিকিৎসার ট্রায়াল বা ‘বাস্কেট স্টাডি’ করার জন্য ব্রেস্ট ক্যানসার, মেলানোমা, ফুসফুসের ক্যানসার, ব্লাডার, গ্যাস্ট্রিক ও বাওয়েল ক্যানসারের রোগীদের নথিবদ্ধ করা হচ্ছে।
যদিও অবশ্য নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হছে না ইঁদুরের উপরে কাজ করলেও এই পদ্ধতি ও ভাইরাসটি মানুষের ক্ষেত্রে কার্যকরি হবে কি না। তবে ইউম্যান এক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখে কাজ এগিয়ে নিতে চাচ্ছেন।
ফং জানান, প্রমাণ আছে যে উনিশ’শ শতকের দিকে র্যাবিসের ভ্যাকসিন ক্যানসারকে নির্মূল করত এবং এ কারণেই সে সময়ে ক্যানসারের প্রভাব কমে গিয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে ভাইরাসের ব্যাপারে সচেতন হতে হয় কারণ এই ভাইরাস ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে এবং মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তবে কাওপক্স অন্যান্য ভাইরাসের সাথে মিশিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তা ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করে এবং এই কাওপক্স মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়।