ভারতজুড়ে এনআরসি হবে, আবারও বললেন অমিত শাহ

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-18 12:02:13

বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাজ্য আসাম দিয়ে শুরু হয়েছিল জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি)। এতে কয়েক লাখ মানুষ তালিকা থেকে বাদ পড়ে আপাতত হয়ে পড়েছেন ‘রাষ্ট্রহীন’।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আসামের হওয়া এনআরসি’তে ১৯ লাখ মানুষ বাদ পড়েছেন। সরকারের দাবি, এসব ব্যক্তিরা নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে যথাযথ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

আসামের এনআরসি নিয়ে বিতর্কের সুরাহা না হতেই সম্প্রতি বাংলাদেশের আরেক প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে একই প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্যটিতে এনআরসি শুরু করতে উঠে-পড়ে লেগেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজ্যসভায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা দিলেন, পুরো দেশে চলবে এনআরসি।

কেন্দ্রীয় সরকারের এ নাগরিক গণনা প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনার মধ্যে একটি হচ্ছে, এটি একটি ধর্মের মানুষকে, নির্দিষ্ট করে মুসলমানদের বাদ দেওয়ার রাষ্ট্রীয় চেষ্টা। এনআরসি’র সমালোচকদের ভাষ্যে এটি তথাকথিত অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি মুসলিমদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সরকারি উদ্যোগ।

তবে, এসব অভিযোগ আগেও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সরকার নাকচ করে দিয়েছে। বুধবারও সেই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন অমিত শাহ।

তিনি বলেন, আসামে এনআরসি করা হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে। সারা দেশে এনআরসি চালানো হবে। একই সময়ে এটি আসামেও আবার করা হবে। কোনো ধর্মের অনুসারীর চিন্তা করার কারণ নেই। সবাইকে নাগরিক গণনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এনআরসি শুধু একটি প্রক্রিয়া।

অমিত শাহ’র এমন মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এনআরসি’র বিরুদ্ধে সোচ্চার মমতা জানান, আর যেখানেই হোক না কেন তার রাজ্যে বিজেপি সরকার এনআরসি চালাতে পারবে না।

তিনি বলেন, (পশ্চিম) বাংলার কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব হরণ করার কারও অধিকার নেই। তার সরকার রাজ্যের মানুষকে সাম্প্রদায়িক বিবাদে ফেলতে দেবে না।

অবৈধ অভিবাসী, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করে বসবাসীদের চিহ্নিত করতে আসামে এনআরসি চালানো হয়। বিভিন্ন সময় অমিত শাহসহ বিজেপির কেন্দ্রীয় ও আসাম রাজ্যের মন্ত্রী ও নেতারা তালিকা থেকে বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেন।

বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেয় এবং ভারতের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চলতি বছর এক মাসেরও কম ব্যবধানে দুই দফার বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, এনআরসি তার দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটি নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কোনো কারণ নেই।

নিউইয়র্কে দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বৈঠক হয় সেপ্টেমরের শেষ সপ্তাহে। এ সময় তারা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে সেখানে সফররত ছিলেন। দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে, নয়াদিল্লিতে। এ সময় শেখ হাসিনা সরকারি আমন্ত্রণে ও ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে সফররত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর