মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত সোমবার

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 08:31:13

নাটকের যেনো আর শেষই হচ্ছে না ভারতের মহারাষ্ট্রে রাজ্য সরকার গঠন নিয়ে। ভারতীয় জনতা পাটি (বিজেপি) ও ন্যাশনালিস্ট কনফারেন্স পার্টির (এনসিপি) একাংশের সরকার গঠন নিয়ে মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস, শিবসেনা ও এনসিপি চ্যালেঞ্জ করেছে এ সরকার গঠন নিয়ে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) কংগ্রেস, শিবসেনা ও এনসিপি'র অভিযোগ শুনে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ। ফাদনাভিস নেতৃত্বাধীন সরকারকে ফ্লোর টেস্টের আহ্বানে ইতিবাচক সাড়া না দিলেও মহারাষ্ট্র গভর্নর ও ফাদনাভিসের মধ্যে আদান-প্রদান করা দুটি চিঠি উপস্থাপন করতে কেন্দ্রকে নির্দেশন দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে সংসদ সদস্যদের অবস্থান জানার সাংবিধানিক প্রক্রিয়া হচ্ছে ফ্লোর টেস্ট।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে বিধান সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবি রাজ্যপালকে ফাদনাভিসে দেওয়া চিঠি ও ফাদনাভিসকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাজ্যপালের দেওয়া চিঠি আদালতে পেশ করতে হবে কেন্দ্র সরকারকে। এরপরই জানা যাবে আদালতের সিদ্ধান্ত।

চমক দেখিয়ে শনিবার স্থানীয় সময় আটটার আগে বিজেপি সরকার গঠন করে। জোট সরকার গঠনে হাত মেলায় শারদ পাওয়ারের এনসিপি। রাজ্যপাল তার কার্যালয়ে বিজেপির দেবেন্দ্র ফাদনাভিসকে মুখ্যমন্ত্রী ও শারদ পাওয়ারের ভাতিজা অজিত পাওয়ারকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ পাঠ করান। বিজেপি দাবি করে, এনসিপির ৫০ সদস্যের সমর্থন রয়েছে তাদের ওপর।

এর আগে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন (প্রেসিডেন্ট রুল) প্রত্যাহার করা হয়। আর এসব হয় রাতের আধারে। বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ অনুমতির (ক্লিয়ারেন্স) ভিত্তিতে স্থানীয় সময় শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করা হয়। বিজেপি'র ফাদনাভিসকে সরকার গঠনে এরপর রাজ্যপাল আমন্ত্রণ জানান।

সরকার গঠনের ঘণ্টা খানেক সময় না যেতেই এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার জানান, অজিত পাওয়ার একাই বিজেপির সঙ্গে গেছেন। তার দল এখনো কংগ্রেস ও শিবসেনাকে নিয়ে সরকার গঠন করতে পারে। এনসিপির দাবি তাদের সঙ্গে রয়েছে জয় পাওয়া ৫০ জন সদস্য।

২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্রের রাজ্য সরকার গঠনে ১৪৪ আসন প্রয়োজন যেকোনো দলের। এবারের নির্বাচনে কোনো দলই তা পায়নি। বিজেপি পায় ১০৫টি, শিবসেনা ৫৬টি, কংগ্রেস ৪৪টি ও এনসিপি ৫৪টি আসন পায়। বাকি আসনগুলোতে ১৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বেশ কয়েকটি ছোট দল জয় পায়।

ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় তিন দশকেরও বেশি পুরনো মিত্রতা ছেদ করে বিজেপি-শিবসেনা। নিজেদের ঘাটিতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে 'রাজনৈতিক শত্রু' হিসেবে পরিচিত কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার গঠন করতে আলোচনা শুরু করে শিবসেনা। আরেক দল এনসিপিকেও নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়।

এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দফায় দফায় আলোচনা করে দল তিনটি। দলগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, সরকার গঠনের খুব কাছে তারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও খবর প্রচার হয়, এ তিন দলের মধ্যে জোট সরকার গঠনে সমঝোতা হয়েছে। সমঝোতা অনুযায়ী, জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হবে শিবসেনা থেকে, আর দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী হবেন কংগ্রেস ও এনসিপি থেকে। সরকার গঠনে সবশেষ আলোচনা করতে শিবসেনার সঙ্গে শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিনগত রাতে বৈঠক করে এনসিপি। কিন্তু শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকার করে শারদ পাওয়ারের ভাতিজা অজিত পাওয়ার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর