বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউজ হাউজ গ্যাসের পরিমাণ পুরোনো সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। গত এক দশকের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিওএমও)।
উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখা বিভিন্ন গ্যাস যেমন মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণও স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। ১৯৯০ সাল থেকে গ্রিনহাউজ গ্যাস বেড়েছে ৪৩ শতাংশ, যা বিশ্ব উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) প্রকাশিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রতিবেদন বলছে, জ্বালানী তেলের ব্যবহার, বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার এবং বনায়ন ধ্বংসের ফলে বিশ্ব উষ্ণায়নে প্রভাব রাখা গ্যাসের পরিমাণ বায়ুমণ্ডলে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বায়ুমণ্ডল, সমুদ্র, বনাঞ্চল এবং জমির দ্বারা শোষণের পরও যে কার্বন ডাই অক্সাইড পরিবেশে থেকে যায়, তার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে।
আর্কটিক অঞ্চলসহ পুরো পৃথিবীর তথ্য পর্যবেক্ষণ করে গবেষকগণ বলছেন, ২০১৮ সালে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মিশ্রণের পরিমাণ ৪০৭ দশমিক ৮ পিপিএমে পোঁছে। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৪০৫ দশমিক ৫ পিপিএম ছিল।
গত দশ বছর ধরে কার্বনের এই বৃদ্ধি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ১৭৫০ সালে অর্থাৎ প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে বর্তমানে কার্বন বৃদ্ধির হার ১৪৭ শতাংশ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইডসহ অন্যান্য উষ্ণায়ণ গ্যাসের মিশ্রণের পরিমাণও নথিবদ্ধ করেছে।
প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ মিথেন নিঃসরণ হয়। মানুষের কর্মকাণ্ডে বাকি ৬০ শতাংশ নিঃসরণ হয়। প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে মিথেনের পরিমাণ এখন ২৫৯ শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল বিগত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে নাইট্রাস অক্সাইড প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট উৎস থেকে নিঃসরণ হয়। নাইট্রোজেন সার ব্যবহারের ফলে এবং সাগর থেকে এই গ্যাস নিঃসরণ হয়। প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে বর্তমানে এর পরিমাণ ১২৩ শতাংশ বেশি।
এই সকল গ্যাসের মিশ্রণ বিশ্বে উষ্ণতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে। সব মিলিয়ে ১৯৯০ সাল থেকে ৪৩ শতাংশ উষ্ণতা বেড়েছে। এটি কমার কোন লক্ষণ নেই বলে উল্লেখ করছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রতিবেদন।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সেক্রেটারি-জেনারেল পিত্তেরি তালাস বিবিসিকে বলেন, এই উষ্ণতা কমার কোন লক্ষণ নেই। মানব কল্যাণের লক্ষ্যে অবশ্যই প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে আসতে হবে।