পারমাণবিক বর্জ্য নিয়ে বিপাকে জার্মানি

ইউরোপ, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 22:41:57

সকল ধরণের পারমাণবিক (নিউক্লিয়ার) বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট বন্ধ করে দিচ্ছে জার্মানি। কিন্তু প্ল্যান্টের রাসায়নিক বর্জ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে দেশটি। দেশটিতে রয়েছে ২৮ হাজার কিউবেক মিটার নিউক্লিয়ার বর্জ্য। এত বর্জ্য কী করবে জার্মানি? তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

এদিকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্যে রাখার জন্য জায়গা খুঁজছে দেশটি। এ বিষয়ে বর্জ্যের জায়গা অনুসন্ধান করা দলের প্রধান প্রফেসর মিরান্ডা শ্রেয়ার্স বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরে জার্মানি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

বর্তমানে দেশটির বিশেষজ্ঞরা এমন একটি নিরাপদ অঞ্চল খুঁজছেন যেখানে ২ হাজার কন্টেইনার বর্জ্য পুঁতে রাখা যায়। কিন্তু জায়গাটি হতে হবে শক্ত পাথরের স্তর যেখানে কোন ভূগর্ভস্থ পানি ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকবে না।

তবে কীভাবে এ বর্জ্য পরিবহনে নিয়ে যাওয়া হবে তা নিয়েও রয়েছে ঝুঁকি। আর যেখানে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পুঁতে রাখা হবে সেইসব অঞ্চলে ভবিষ্যত প্রজন্মকে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করতে হবে যেন তারা এ ধরণের এলাকা এড়িয়ে চলে। তবে বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন বিষয়টি হল তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাখার জন্য উপযুক্ত স্থান পাওয়া।

২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমায় বিস্ফোরণের পর জার্মানি তাদের সকল পারমাণবিক চুল্লি গুলো বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা করে। দেশটিতে চলা সাতটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি ২০২২ সালের মধ্যে বন্ধ করে দিবে জার্মান সরকার। তবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করলেই পারমাণবিক সমস্যা থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশটি। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হলে তার তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিয়ে নতুন ঝামেলার সম্মুখীন হবে দেশটি। বর্জ্য রাখার জন্য তারা সময় পাবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত।

এবিষয়ে জার্মানির অর্থনৈতিক বিষয় ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তাদের একমাত্র লক্ষ্য তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের জন্য একটি চূড়ান্ত জায়গার সন্ধান করা, যা দশ লাখ বছরের জন্য সুরক্ষা সরবরাহ করবে। আর যার জন্য দেশটি কিছু জায়গার তালিকা করেছে বলে জানায় তারা।

দেশটিতে বর্তমানে যত পারমাণবিক বর্জ্য নির্গত হচ্ছে তা সব পারমাণবিক চুল্লির নিকটেই রাখা হচ্ছে। তবে যেখানে বর্জ্যগুলো রাখা হচ্ছে তা শুধুমাত্র কয়েক দশক পর্যন্ত রাখা যাবে বলে জানিয়েছেন মিউনিখ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির চেয়ারম্যান শ্রেরস।

তিনি বলেন, জার্মানি জুড়ে কয়েক ডজন অস্থায়ী স্টোরেজ সাইট রয়েছে। কিন্তু এখন স্থায়ী একটি জায়গার সন্ধান চলছে। আর জায়গাটি কমপক্ষে ১ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পর্যন্ত যেতে পারে। তবে স্থানটি ভূতাত্ত্বিকভাবে খুব স্থিতিশীল হওয়া দরকার বলে জানান শ্রেরস। ওই স্থানে ভূমিকম্প ও জলপ্রবাহের কোন লক্ষণ থাকতে পারবে না।

বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৪০০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লি রয়েছে। তবে অনেক সরকার এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বন্ধ করলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? তেজস্ক্রিয় বর্জ্য সংরক্ষণ নিয়ে জরুরি পদেক্ষেপ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন শ্রেরস।

এ সম্পর্কিত আরও খবর