লোকজন তখনই নিজেদের গোপন রাখতে চাওয়া তথ্য প্রকাশ করে ফেলতে পারে যখন তারা ওই তথ্যের বিষয়ে অতিরিক্ত সচেতন ও সাবধানী। এক গবেষণায় এমন দাবি করেছেন গবেষকরা।
‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল সোশ্যাল সাইকোলজি’-তে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, অধিক সতর্ক ও সাবধানী থাকা অবস্থাতেই মানুষজন নিজেদের বিষয়ে স্বয়ংক্রিভাবে তথ্য প্রকাশ করে ফেলে।
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় ও অর্থনীতি অনুষদের অধ্যাপক ব্রেন্ট কোকার এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যান এল ম্যাকগিল এ গবেষণা প্রতিবেদন যৌথভাবে প্রকাশ করেছেন।
অধ্যাপক ব্রেন্ট কোকার বলেন, অতি সতর্ক অবস্থায় মানুষজন গোপন রাখতে চাওয়া বিষয়গুলোতেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফেলে এবং পরে তারা আফসোস করে।
তিনি বলেন, যখন আমরা সবচেয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকি, যখন আমরা খুব সাবধানতা অবলম্বন করে কথা বলি— যেমন চাকরির ইন্টারভিউ, মিডিয়া এঙ্গেজমেন্ট, জরুরি মিটিং, এমনকি রোমান্টিক এনকাউন্টারের সময়েও এমনটা ঘটে।
গবেষণাটির জন্য আট ধরনের সমীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। প্রথম সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের একটি ডেটিং প্রোফাইল লিখতে বলা হয়েছিল। কৌতূহলজনক বিষয় হলো—যারা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যাপারে খুব সতর্কতা অবলম্বন করেন তারাই সবচেয়ে বেশি বিব্রতকর, সংবেদনশীল, অন্তরঙ্গ ও উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করে ফেলেন। অন্যদিকে যারা তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছন্দ্য তারা নিজেদের বিষয়ে এমন তথ্য বেফাঁস করেননি।
অংশগ্রহণকারীদের ফলো-আপ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অতি সাবধানীদের ডেটিং প্রোফাইলগুলি স্বচ্ছন্দ্য অংশগ্রহণকারীদের প্রোফাইলের চেয়ে কম আকর্ষণীয় ছিল। সাবধানীরা অতি সতর্কতায় বেশি তথ্য প্রকাশ করে ফেলেছেন, যাতে অন্যকে আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে নেতিবাচকভাবে প্রভাব পড়েছে।
গবেষকরা আরেক সমীক্ষায় দেখেছেন— শারীরিক অনুশীলনের পরে লোকেদের অত্যন্ত ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
প্রফেসর কোকার বলেন, ভুল মুহূর্তে ভুল কথা বলায় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও সম্পর্ক নষ্ট হওয়া, আস্থা হারানো ও ব্যক্তির চরিত্রের প্রতি বিরূপ ধারণা তৈরি করতে পারে। চাপের সময়ে আমাদের মুখ থেকে কী বেরিয়ে আসে তা নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।