১২ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে মেয়েদের স্কুলে নেন মিয়া খান

ভারত, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 21:49:14

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে শিশুর জন্ম বিশ্বের যে কোনও জায়গার চেয়ে সবেচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। বিশেষ করে কন্যা শিশুর জন্য তা আরও বিপজ্জনক। যে দেশে সন্তান জন্মদানের বিষয়টি দুশ্চিন্তার সেখানে তার লেখাপড়ার চাহিদা মেটানো পিতা-মাতার জন্য একবারেই দুষ্কর।  

তবে এমন কাজটি দিনের পর দিনে করে যাচ্ছেন আফগানিস্তানের শাহরানা এলাকার বাসিন্দা মিয়া খান। তার তিন কন্যা সন্তান। প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মেয়েদের নিয়ে স্কুলে যান এই পিতা। ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তার এই কর্মকাণ্ড।

আফগানিস্তানের কাজ করা বেসরকারি সংস্থা সুইডিশ কমিটি জানায়, মিয়া খান মোটরবাইকে করে প্রতিদিন তার তিন মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যান। তাদের স্কুল ছুটি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এই কাজ তার এখন দৈনন্দিন কর্মতালিকায় স্থান পেয়েছে।

মিয়া খান তার তিন মেয়েকে প্রতিদিন নুরানিয়া স্কুলে যান। এই স্কুলটি সুইডিশ কমিটি দ্বারা পরিচালিত। তিনি মনে করেন, তার কাছে মেয়েদের পড়াশোনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যে এলাকায় থাকেন সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই।

মিয়া খানের কন্যা রোজি

মিয়া খান বলেন, ‘আমি পড়াশুনা জানি না। দৈনিক মজুরিতে আমার সংসার চলে। আমাদের অঞ্চলে কোনও মহিলা চিকিৎসক নেই। এজন্য আমার মেয়েদের পড়াশুনা করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেদের মতো মেয়েদেরও শিক্ষিত করার আমার অনেক ইচ্ছা।

মিয়া খানের মেয়েরাও পড়াশোনা করতে পেরে খুশি। তার তিন কন্যার একজন রোজি বলেন, পড়াশোনা করতে পরে আমি অনেক খুশি। আমি এই বছর ছয় গ্রেডে পড়ছি। বাবা ভাইদের এবং আমাদের প্রতিদিন মোটরসাইকেলে করে স্কুলে নিয়ে আসেন। ছুটি হলে নিয়ে যান।

সম্প্রতি মিয়া খানকে নিয়ে সুইডিশ কমিটি সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন। সেই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে। মেয়েদের পড়াশুনার প্রতি মিয়া খানের এমন ঐকান্তিক চেষ্টার জন্য নেটিজেনরা (ইন্টারনেট ব্যবহারকারী) তাকে বাহাবা দেন।

সেই পোস্টে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘গর্বিত এমন পিতার জন্য, তিনি একজন সত্যিকারের হিরো’। আরেকজন লেখেন, ‘শ্রদ্ধা তার জন্য’।

এ সম্পর্কিত আরও খবর