ইন্দোনেশিয়ার একটি গুহার দেয়ালে প্রাচীন চিত্রকর্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চিত্রকর্মটি প্রায় ৪৪ হাজার বছরের পুরনো।
চিত্রকর্মের এক অংশের বর্ণনায় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বলছেন, চিত্রটি দেখে তাদের ধারণা অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক পশু আকৃতির শিকারিরা অস্ত্র ও রশি হাতে মহিষ শিকার করছে।
চিত্রকর্মগুলো পাওয়া গেছে ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় বরনেও দ্বীপের সুলায়েসির লেং বুলু সিপং গুহায়। পাঁচ মিটার প্রস্থের চিত্রকর্মটি দেখে গবেষকেরা বলছেন, এক অংশে মহিষ প্রজাতির অ্যানোয়া ও বুনো শুয়োরের চিত্র রয়েছে। তার পাশে মানুষের মতো কিছু ক্ষুদ্র আকৃতির চিত্র।
তবে, তাদের মধ্যে প্রাণীর শারীরিক গঠনও কিছুটা রয়েছে। মুখাবয়ব পশুর মতো এবং সাথে লেজও রয়েছে। অন্য এক অংশে অস্ত্রধারী আকৃতিগুলো অ্যানোয়াটিকে শিকার করছে।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্বদ্যিালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক অ্যাডাম ব্রুম দু’বছর আগে প্রথম চিত্রকর্মটির সন্ধান পান। ব্রুম ও তার সহকারী গবেষকেরা নেচার জার্নালে চিত্রটির বিভিন্ন প্রমাণাদি তুলে ধরেছেন। তারা এই চিত্রকর্মটিকে পৃথিবীর লিখিত ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো চিত্রকর্ম হিসেবে দাবি করছেন।
ব্রুম বলেন, ‘আমি আগে কখনো এরকম চিত্র দেখিনি। আমি বলতে চাচ্ছি, এই অঞ্চলে বহু পাহাড়ে শত শত চিত্রকর্ম দেখেছি আমরা। কিন্তু শিকার করার এমন চিত্র আগে দেখিনি।’
চিত্রকর্মের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে গবেষকেরা। তারা দেখতে পেয়েছে, শুয়োরের চিত্রের ওপর বেড়ে ওঠা ক্যালসাইটি কমপক্ষে ৪৩ হাজার ৯০০ বছরের পুরোনো। সুলাওয়েসিতে কমপক্ষে ২৪২টি গুহা বা পুরোনো আশ্রয় কেন্দ্রে প্রাচীন চিত্রকর্ম রয়েছে বলে জানা গেছে।
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় মানব ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো চিত্রকর্ম পাওয়ার দাবি করেন গবেষকেরা। পাথরের ওপর আঁকা ওই চিত্রকর্মটি ৭৩ হাজার বছরের পুরোনো বলে দাবি আবিষ্কারকদের।