সম্প্রীতির অনন্য নজির, এক ছাদের নিচে মসজিদ-গির্জা-সিনাগগ

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 21:43:10

বিশ্বজুড়ে ধর্ম যখন বৈষম্যের দেয়াল তুলে দাঁড়িয়েছে সেখানে কিছু ভূখণ্ড বিভেদের প্রাচীর ভেঙে দেখাচ্ছে নতুন দিগন্ত। বিশ্বাস আর লৌকিকতার বেড়াজালে মানবতার ধর্ম ভুলতে বসা এ পৃথিবীর মানুষের জন্য বদলে দিচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপট।  

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির সাদিয়াত আইল্যান্ডে একই কমপ্লেক্সে নির্মিত হচ্ছে মসজিদ, মন্দির ও সিনাগগ। সমন্বিত এই কমপ্লেক্সে ইসলাম ধর্মের প্রার্থনালয় হিসেবে মসজিদ, খ্রিস্টান ধর্মের উপাসনালয় হিসেবে গির্জা ও ইহুদি ধর্মের উপসনালয় হিসেবে সিনাগগ নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম সর্বধর্মীয় উপাসনালয় হিসেবে এই কমপ্লেক্সের দ্বার উন্মোচন হলো।

কমপ্লেক্সটির নাম দেওয়া হয়েছে 'আব্রাহাম ফ্যামিলি হাউজ'।

কমপ্লেক্সটির নাম দেওয়া হয়েছে 'আব্রাহাম ফ্যামিলি হাউজ'। আব্রাহাম নাম দেওয়ার পেছনের গল্পটা ভিন্ন। ইসলাম, ইহুদি ও খ্রিস্টান এই তিন ধর্মেই আব্রাহামকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই ভবনের নামকরণ করা হয়েছে।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পোপ ফ্রান্সিস আবর আমিরাতে সফরকালে এই কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়। সফরকালে পোপ আল-আজাহার মসজিদের ইমাম আল তায়েবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান তিনি। বিশ্বধর্ম ও মানবভ্রাতৃত্বের মিলবন্ধন রচনা করতে সহনশীল ও শান্তির বাণী নিয়ে একসঙ্গে বসবাসের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

চলতি মাসে এই কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে

আবুধাবির যুবরাজ শেখ মুহাম্মদ বিন জায়েদ এই কমপ্লেক্স ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এই ঐতিহাসিক সাক্ষাতের নিদর্শন স্বরূপ আরব আমিরাতে বসবাসরত বিভিন্ন জাতি, জাতীয়তা ও ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষকে একই ছত্রছায়ায় পুনর্মিলিত করতে এই উদ্যোগ নেন তিনি। শান্তিপূর্ণ সহবস্থান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে ভ্রাতৃত্বের সম্প্রতি ছড়িয়ে দিতেই উদাহরণ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে 'আব্রাহাম ফ্যামিলি হাউজ'।  

২০২২ সাল নাগাদ এই কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে শেখ মোহাম্মদ ও শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ এই ভবনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন।

একটি লাইব্রেরি ও জাদুঘরও নির্মাণ করা হবে এখানে

চলতি বছর সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটন সিটির পাবলিক গ্রন্থগারে এক ইভেন্টে এর নকশা উপস্থাপন করা হয়। যেখানে ব্রিটিশ ফার্মহাউজ এডজায়া অ্যাসোসিয়েট এই ভবনের নকশার অনুমোদন পায়। নকশায় পাশাপাশি তিনটি উপাসনালয়সহ একটি লাইব্রেরি ও জাদুঘরের স্থাপনা দেখানো হয়।

সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে উপজীব্য করে এর নকশা করা হয়েছে

তিন ধর্মের মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে উপজীব্য করে উপাসনালয় তিনটির মূল নকশা করা হয়। এই তিন ভবনের চারপাশে বিস্তৃত বাগানটিতে সম্প্রদায়, সভ্যতা ও সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে রুপক অর্থে দাঁড় করানো হয়েছে বলে জানান বিখ্যাত স্থপতি আদজায়। তিনি আরও বলেন, খুব সমসাময়িক এই নকশায় তিন ধর্মের মানুষের ইতিহাসকে চিত্রায়িত করা হয়েছে।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর