ইরান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বের প্রভাব নেই বাংলাদেশে, সতর্ক এমিরেটস

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

লুৎফে আলি মহব্বত, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 09:35:19

উপসাগরীয় অঞ্চলের সামরিক উত্তেজনার কারণে বাংলাদেশে কোনও প্রভাব পড়েনি। মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের শ্রমবাজার, ব্যবসা, ওমরাহ ও সাধারণ বিমান পরিসেবা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উত্তেজনার সরাসরি কোনও প্রভাব দেখতে পাননি সংশ্লিষ্টরা। তবে এমিরেটস এয়ারওয়েজের পক্ষে সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানানো হয়েছে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে চলাচলকারী বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের গালফ উপসাগরে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সংঘাতময় পরিস্থিতি প্রলম্বিত হলে তার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) গালফ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান বেসামরিক বিমান সংস্থা এমিরেটস বাংলাদেশের এজেন্সিগুলোকে একটি সার্কুলার ইস্যু করেছে। এমিরেটস জানিয়েছে, ইরান/ইরাকের পরিস্থিতি তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সংস্থার পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিরাপদে বিমান চলাচল বিষয়ে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, তাহলে এমিরেটস তাদের অপারেশনে কিছু পরিবর্তন আনবে। ইরান ও ইরাকে বিমান টিকেট ইস্যু ও বুকিং-এর ক্ষেত্রে এমিরেটস এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটরদের কিছু পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ যাত্রী পরিসেবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ইরানের আকাশে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ফলে আগাম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলে চলাচলকারী বেসামরিক বিমান সংস্থাগুলো সাবধানতা অবলম্বন করছে বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা।

নিরাপত্তা বিষয়ে এমিরেটসের সার্কুলার, বার্তা২৪.কম
নিরাপত্তা বিষয়ে এমিরেটসের সার্কুলার

বার্তা২৪.কমকে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ সাব্বির এম হোসেন জানান, বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগর অভিমুখী সকল ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। যাত্রী চলাচলের প্রবাহেও কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

সাব্বির এম হোসেন বলেন, উপসাগরের শ্রমবাজার ও স্বাভাবিক ব্যবসার কাজে নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থার যাত্রীবাহী ও কার্গো বিমানের সিডিউল ঠিক আছে। এতে নিয়মিত যাত্রী ও পণ্য চলাচল করছে। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে এক্ষেত্রে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি। আগাম টিকেটিং ও কার্গো বুকিং-এর ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

হাব ও আটাব-এর নির্বাহী সদস্য আলহাজ আকবর আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাধারণ যাত্রী পরিসেবার মতোই বর্তমানে ওমরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির ওমরাহের বুকিং চলছে। আগামী মে মাসে রমজানকে সামনে রেখে গ্রুপ ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে টিকিট বুকিং ও বাড়িভাড়া ইত্যাদি কাজে বিভিন্ন এজেন্সি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র টেনশনের কোনও প্রভাব এক্ষেত্রে পড়েনি।

আলহাজ আকবর আলী বলেন, ওমরাহের ক্ষেত্রে অল্প কয়েকটি এয়ারলাইন্স মনোপলি ব্যবসা করছে। বাংলাদেশ বিমানের উচিত জেদ্দা ও মদিনায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট বাড়ানো। লাভজনক এই রুটে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোরও ব্যবসা প্রসারিত করার চিন্তা করা দরকার।

তবে এভিয়েশনের সঙ্গে জড়িত দায়িত্বশীল সূত্রগুলো মনে করে, মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সামরিক সংঘাতময় পরিস্থিতি তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হলে তার নেতিবাচক প্রভাব নানাভাবে পড়বে। এমন হলে তেলের দাম বেড়ে টিকেটের দামও বাড়বে। বিভিন্ন বিমান সংস্থাকে তখন নিরাপদে চলাচলের স্বার্থে রুট পরিবর্তন বা প্রলম্বিতও করতে হতে পারে। সে অবস্থায়ও টিকেটের দাম এবং যাত্রার সময় আরও বাড়বে। তদুপরি যুদ্ধাবস্থার কারণে জনশক্তি ব্যাবসা, যাত্রী ও পণ্য চলাচল কমারও আশংকা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর