ইরান ২০১৫ সালের চুক্তির আগে যত ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করত এখন তার থেকে বেশি পরিমাণে সমৃদ্ধ করছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশ্যে টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এ কথা বলেন।
ভাষণে রুহানি বলেন, চুক্তি হওয়ার আগে আমরা যতটুকু ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করতাম এখন এর চেয়ে বেশি করছি। আর যা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইরানের উপর চাপ বেড়েছে, তবে আমরা পিছপা হব না।
২০১৫ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ক্ষমতায় থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করে ইরান। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এরপর থেকে ইরানের ওপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। আর কাসিম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ইরান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বেড়ে যায়। সোলাইমানি নিহত হওয়ার জেরে ল্যান্ডমার্ক পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে ইরান।
এর পর বিশ্লেষকরা ধারণা করেন, পরবর্তী একবছরের মধ্যে ইরান পরমাণু অস্ত্রের মালিক হবে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ইরানকে কোনো দিন পরমাণু সমৃদ্ধ দেশ হতে দিবো না।
তবে অব্যাহত উত্তেজনা সত্ত্বেও ইরানি প্রেসিডেন্ট আগে বলেছেন, তেহরান সামরিক সংঘাত ও যুদ্ধ রোধে কাজ করে যাচ্ছে এবং বিশ্বের সঙ্গে সংলাপের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্লেনে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বিধ্বস্ত ও মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর থেকে পরমাণু চুক্তি নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে চুক্তিগত অন্যদেশগুলো বেশ সরব অবস্থানে রয়েছে। গত সপ্তাহের প্রথম দিকে তেহরানের বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি বিরোধ নিষ্পত্তি কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দেন। তার প্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিটি এখনো মরে যায়নি।
চুক্তির আগে ইরান ২০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করত। আর চুক্তিতে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ সমৃদ্ধ করার কথা উল্লেখ করা হয়।