পোষা কুকুরকে নির্যাতন করায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা

, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 04:18:25

সিঙ্গাপুরের একজন বাসিন্দা একটি পুডেল কুকুরকে লালন-পালন করছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন সময় ছোট্ট কুকুরটিকে তিনি নির্যাতন করতেন। যা ভিডিও করেন তার প্রতিবেশী এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কুকুরের মালিককে ১০ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার (সাড়ে ৬ লাখ টাকা) জরিমানা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আগামী এক বছরের জন্য তিনি কোনো ধরনের প্রাণী পুষতে পারবেন না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পোষা কুকুরকে অযথা ব্যথা দেয়ার কারণে গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চের দিকে ৩৮ বছর বয়সী সিঙ্গাপুরিয়ান চায়নিজ সেন চিনের নামে যথাক্রমে দুটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। সেন চিনের প্রতিবেশীর দুটি অভিযোগই আমলে নেন আদালত।

যিউশান এলাকায় সেন বসবাস করেন। বাড়ির বাগানে পালিত কুকুরের ওপর নির্মম অত্যাচারের সময় সেনের প্রতিবেশী তা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। পরে সিঙ্গাপুরের এগ্রি-ফুড এবং প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। দ্বিতীয় নির্যাতনের ঘটনার দু’দিন পর ২০১৯ সালের ৯ মার্চ সেনের বাড়ি পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষ। তারা প্রাপ্ত ভিডিওর সঙ্গে মিল থাকা সেন চিন এবং তার কুকুরের দেখা পান।

অধিকতর তদন্তে দেখা যায়, গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টায় বাসার পাশের বাগানে ছোট পুডেল কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে যান সেন। এ সময় কুকুরটি এক মিটার পিছিয়ে যাওয়ায় সেন কুকুরটির শিকল ধরে জোরে টান দেন। এর কয়েক সপ্তাহ পর গত বছরের ৯ মার্চ সন্ধ্যায় সেন আবারও বাগানে কুকুরটি নিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই তিনি পুডেল কুকুরটিকে লাথি মারেন এবং তার গলার শিকল টেনে মাটি থেকে বেঞ্চে উঠিয়ে বসান। এছাড়া তিনি কুকুরটিকে শিকল ধরে বেশ কয়েকবার ঘুরাতে থাকেন এবং গলার শিকল ধরে আঘাতও করেন।

পুডেল কুকুর

আদালতে শুনানির সময় সেন উপস্থিত ছিলেন না। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল পার্ক বোর্ডের প্রসিকিউটর সেনকে ১০ হাজার ডলার বা সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। একই সঙ্গে আগামী এক বছরের জন্য তিনি কোন প্রাণী পুষতে পারবেন না বলেও জানিয়েছেন।

প্রসিকিউটর আদালতকে বলেন, ‘প্রাণিটি পোষা ছিল এবং কোনো স্থায়ী আঘাত পায়নি পুডেল কুকুরটি।’

সেন একজন মান্দারিন দো-ভাষীর মাধ্যমে আদালতকে জানান, কাজের জন্য তিনি ভীষণভাবে অনুতপ্ত। পোষা কুকুরটি পেছনের দিকে চলে যেতে চাচ্ছিল, কিন্তু তার কাজের তাড়া ছিল। তাই তিনি শিকল ধরে টানছিলেন। তিনি শিকল খুব জোরে টানেননি এবং স্বল্প সময়ের জন্য টেনেছেন।

প্রসিকিউটর বলেন, ‘তবে তদন্তে দেখা যায়, দুটি ক্ষেত্রেই সেন নিজের ফোন ব্যবহারে ব্যস্ত ছিলেন। আসলে তিনি কুকুরটির প্রতি কোনো মনোযোগ দেননি।’

সেন উত্তরে বলেন, ‘আমি কুকুরটির প্রতি মনযোগী ছিলাম এবং ফোনের প্রতি আসক্ত ছিলাম না। এ ধরনের ভুল আমি করেছি, কারণ এর আগে আমি কোনো প্রাণি পুষিনি। ফলে আমি সীমাটাও জানতাম না। আমি জানতাম না, কীভাবে একটি কুকুরকে প্রশিক্ষিত করা যায়।’

উল্লেখ্য, অপ্রয়োজনে কোনো প্রাণীকে কষ্ট দেয়া হলে বা নির্যাতন করা হলে সিঙ্গাপুরে পশু এবং পাখি আইনে সর্বোচ্চ ১৮ মাস এবং ১৫ হাজার ডলার বা প্রায় ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর