অভিবাসী শ্রমিকদের স্পনসরশিপ ব্যবস্থা বাতিল করছে সৌদি!

মধ্যপ্রাচ্য, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-22 18:12:56

অভিবাসী শ্রমিকদের স্পনসরশিপ (কাফালা) বাতিল করতে চলেছে সৌদি সরকার। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে বছরের পর বছর বিতর্ক চলার পর এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

সৌদি আরবের একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে সৌদি গেজেট।

সর্বশেষ কয়েক দশক ধরে দেশটিতে অভিবাসী শ্রমিকদের নিতে স্পনসরশিপ প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি শ্রমিক নেওয়া হত ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে। এতে সৌদিতে নেওয়া শ্রমিকদের সকল ক্ষমতা থাকত স্পনসরশিপ দিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ওপর। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় প্রায়শ শ্রমিকদের নির্যাতনের খবর পাওয়া যেত। যার প্রেক্ষিতে দীর্ঘকাল ধরে এ ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা হয়ে আসছে বিশ্বব্যাপী।

১৯৫০ সালে এই ব্যবস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ব্যবস্থায় অনুযায়ী, প্রবাসী শ্রমিকদের তাদের নিয়োগকর্তা ও স্পন্সরের নির্দেশে চলতে হয়। এমনকি তাদের অনুমতি ছাড়া সৌদিতে আসতে বা যেতে পারবে না তারা। সংক্ষেপে বলা চলে, নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের ভিসা এবং আইনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

অভিবাসীদের এমন নিয়ন্ত্রণের জন্য এটিকে আধুনিক দাসত্বের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আর এই ব্যবস্থা শুধু সৌদিতে নয় পুরো উপসাগরীয় অঞ্চলেও বিদ্যমান।

উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে শ্রমিকরা গেলে প্রাথমিকভাবে তাদেরকে নির্মাণ এবং গৃহস্থালি কাজে নিযুক্ত হয়। তবে শ্রমিকদের সঙ্গে পক্ষপাত মূলক আচরণ ও তাদের অপব্যবহার করা হয়। তাদেরকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয়। এমনকি তাদেরকে বেতনও দেওয়া হয় না।

এই ব্যবস্থাটি বাতিল হলে অভিবাসীরা দেশে প্রবেশ ও বাহিরের জন্য স্বাধীনতা থাকবে। স্পনসরের অনুমতি ছাড়াই তাদের পাসপোর্ট স্ট্যাম্প লাগিয়ে দেওয়া হবে।

যদি এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয় তাহলে সৌদি আরবের প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে এটি হবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সংস্কার।

স্পনসরশিপ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার জন্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মাঝে কয়েকবার বিতর্ক হয়েছে। এর মধ্যে কাতার স্পনসরশিপ ব্যবস্থার কিছু অংশ বিলুপ্ত করেছে। বর্তমানে কোনো অভিবাসী শ্রমিক দেশটি থেকে যেতে চাইলে তার স্পনসরশিপের অনুমতি লাগে না।

এর আগেও ২০১৭ সালে সৌদি সরকার এই ব্যবস্থা বাতিল করবে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু পরে সৌদি কর্তৃপক্ষ এটি অস্বীকার করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর