টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করতে দুতার্তের আবেদন

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 06:13:39

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহৎ দুটি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করার জন্য আবেদন করেছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুতার্তের আইনজীবী এই আপিল করেন বলে জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

চ্যানেল দুটি হল, এবিএস ও সিবিএন। চ্যানেল দুটি দুতার্তের শাসনকে 'স্বৈরশাসকের লক্ষণ' বলায় তার প্রশাসন এ আবেদন করেছে।

আবেদনে আইনজীবী সলিসিটার জেনারেল জোস ক্যালিদা বলেন, এবিএস ও সিবিএন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক অত্যন্ত আপত্তিজনক আচরণ করছেন। তাই তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি বাতিল করে দেওয়া উচিত।

ক্যালিদা অভিযোগ করে বলেন, তারা কর্পোরেটের আদলে বিদেশি সংস্থাগুলোকে তাদের ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সুযোগ করে দিচ্ছে। যা আমাদের সংবিধানকে লঙ্ঘন করে।

ফিলিপাইনের টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি দেশটির একটি ধনী পরিবারের আওতাধীন। ২০১৬ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে দুতার্তে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির প্রতি তার ঘৃণা প্রকাশ করে আসছে।

গত বছর দুতার্তে দাবি করেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন চালাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে টেলিভিশনগুলো। আর গত বছর দুতার্তে জানান, টেলিভিশন নেটওয়ার্কের ২৫ বছরের পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তিনি ব্লক করে দিবেন।

আর গত বছরের ডিসেম্বরে এবিএসকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, এই এবিএস'র চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারা তা রিনিউ করতে চাইছে। তাদের কি হবে আমি জানি না। যদি আমি তাদের জায়গায় থাকতাম তাহলে এটি বিক্রি করে দিতাম।

দুতার্তের প্রশাসন মিডিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ণ রাষ্ট্রের কৌশল ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছে ফিলিপিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড্যানিলো। তিনি কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামালে সমস্ত স্বৈরশাসকের প্রধান শত্রু মিডিয়া। তার এই ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার। সে নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যম গুলোকে হয়রানি ও ভয় দেখাতে চায় যাতে অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলো তার বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলে। আর এটি স্বৈরাতন্ত্রের স্পষ্ট লক্ষণ।

এদিকে দুতার্তের এই আপিলের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতিতে দিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। তারা জানায়, এই আপিল কোর্টে যাওয়ার আগে দুতার্তের প্রশাসন দুটি চ্যানেল বন্ধ করতে চেয়েছিল। তারা আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। ব্যবসা পরিচালনার জন্য আমরা সংবিধানের সমস্ত আইন মেনে চলি।

সমালোচনা করা মিডিয়া সংস্থাগুলোকে হয়রানি দুতার্তের প্রশাসনের জন্য নতুন নয়। ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে সে ফেক নিউজ ছড়ানোর দায়ে কয়েকটি নিউজ ওয়েবসাইট ও রাপ্লার বন্ধ করতে চায়। দুতার্তের সরকারের চাপে দেশটির সবচেয়ে বড় সংবাদপত্র ডেইলি ইনকুরিয়ারের যৌথ মালিকরা তাদের সমস্ত শেয়ার দুতার্তের নিকটে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর