চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে। শুরুতে এটি শুধু চীনের ভূখণ্ডেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটি এশিয়ার সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, আরব আমিরাত, ইরানসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে এশিয়া অঞ্চল থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ পর্যন্ত। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমার কোনো লক্ষণ নেই। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে চীনে ২৩৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার মানুষ। চীনের বাইরেও এই ভাইরাসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে এরই মধ্যে বিশ্বের বহু নামী-দামি এয়ারলাইনস চীনের মূল ভূখণ্ডে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। ফ্লাইট সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছে কেউ কেউ। তবে যেসব এয়ারলাইনস এখনো চীনে ফ্লাইট পরিচালনা করছে তারা তেমন একটা যাত্রী পাচ্ছে না।
এ অবস্থায় প্লেন চলাচল খাতে ভয়াবহ অশনি সংকেত দেখা গিয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) বলছে, যেভাবে এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রী কমে গিয়েছে তাতে এ খাতে চলতি বছরে ২৯.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লোকসান হবে। এর মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের এয়ারলাইনসগুলোর লোকসান হয়েছে ২৭.৮ বিলিয়ন ডলার। এশিয়ার বাইরে ১.৫ বিলিয়ন ডলার লোকসান হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আইএটিএ বলছে, চীনের অভ্যন্তরীণ প্লেন চলাচল খাতে লোকসান হবে ১২.৮ বিলিয়ন ডলার। ট্রেড বডিগুলো বলছে, এয়ারলাইনসগুলোতে ১৩ শতাংশ যাত্রী কমেছে, যার বেশিরভাগ চীনে।
আইএটিএ এর সিইও আলেকজান্ডার ডি জুনিয়েক এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের সবচেয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ। আইএটিএ বলছে, দুই দশক আগে সার্স ভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল তার ব্যাপক বিস্তার কমতে প্রায় ৬ মাস সময় লেগেছিল। করোনাভাইরাস যা অফিসিয়ালি কোভিড-১৯ নামে পরিচিত ভাইরাসটিও একই ধরনের আচরণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার যদি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে অন্য অঞ্চলের এয়ারলাইনসগুলোও বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হবে বলে সতর্ক করেছে আইএটিএ।
এর আগে আইএটিএ চলতি বছর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এ খাতের ৪.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। আর এখন প্রবৃদ্ধির বদলে ৮.২ শতাংশ হ্রাসের কথা বলছে।