বায়ুমণ্ডল থেকে আগের তুলনায় কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে না ট্রপিক্যাল (গ্রীষ্মমন্ডলীয়) বনাঞ্চল। এছাড়া বনাঞ্চলগুলোর কার্বন শোষণের ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের করা এক সমীক্ষায় এ নতুন তথ্য উঠে এসেছে।
গত বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সমীক্ষাটি নেচার জার্নালে প্রকাশ করা হয়। আর যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান।
সমীক্ষায় জানানো হয়, পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত অ্যামাজন আগে প্রচুর পরিমাণে কার্বন শোষণ করত। কিন্তু কৃষির জমির জন্য বনাঞ্চলটি সাবাড় করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে পরবর্তী দশকে বনাঞ্চলটি থেকে কার্বন নির্গমন করবে।
যদি এরকমটা হয় তাহলে জলবায়ু শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে ও যার প্রভাব ভয়াবহ হবে। আর এ থেকে রক্ষা পেতে হলে বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন কমাতে হবে।
গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক আমেরিকার লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক সাইমন্স লুইস জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে উদ্বেগজনক প্রভাবগুলোর মধ্যে একটি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কার্বন নির্গমনে এই দশকের জলবায়ু মডেল অন্যসব দশকের তুলনায় হতাশাজনক।
১০০টি বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা অনুসারে, সর্বশেষ তিন দশক ধরে বিশ্বের ট্রপিক্যাল বনগুলো দ্বারা কার্বনের শোষণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। অধিক তাপমাত্রা, খরা ও বনাঞ্চল উজাড়ের ফলে এমনটি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বনগুলো ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে পড়ায় এই নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। আর এই ট্রপিক্যাল বনাঞ্চলগুলো ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন করা শুরু করবে।
সাইমন্স লুইস ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ানকে জানান, এ পর্যন্ত মানুষ অনেক ভাগ্যবান ছিল। এর প্রধান কারণ ট্রপিক্যাল বনগুলো প্রচুর পরিমাণে কার্বন শোষণ করত। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রপিক্যাল বনগুলো তা চালিয়ে যেতে পারবে না। বিশ্বব্যাপী কার্বন চক্র আমাদের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করার আগে আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানি নির্গমন রোধ করতে হবে। এখনই সময় কাজ করার।
১৯৯০ এর দশকে বায়ুমণ্ডল থেকে ৪৬ বিলিয়ন টন কার্বন কমানো হয়েছিল। যার মধ্যে ১৭ শতাংশ কার্বন মানুষ দ্বারা উৎপাদিত হয়েছিল। আর গত দশকে মাত্র ২৫ বিলিয়ন টন কার্বন কমানো সম্ভব হয়েছিল। যা ছিল বিশ্বের মোট কার্বন উৎপাদনের ৬ শতাংশ।