এবার কলকাতায় প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। লন্ডন থেকে মুম্বাই হয়ে কলকাতায় আসা এক তরুণের (১৮) দেহে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) কভিড-১৯ এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। করোনা শনাক্তের পর তাকে কলকাতার বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই তরুণ রোববার ভোরে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন।
কলকাতার স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী সেখানকার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ওই তরুণের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ হয়েছে। তার মাধ্যমে যাতে অন্য কেউ আক্রান্ত না হন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আর তার মা-বাবা ও গাড়িচালককে রাজারহাটে সঙ্গরোধে (কোয়রান্টাইন) রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, তিনি ও তার বান্ধবী সপ্তাহখানেক আগে লন্ডনে একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন। পরে ওই বান্ধবীর দেহে কভিড-১৯ ধরা পড়ে। সে জন্য সোমবার দুপুরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ওই তরুণের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়ায় তাকে আইডি হাসপাতালে যেতে বলা হয়। এজন্য তার অপেক্ষায় আইডি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও হাজির ছিলেন। কিন্তু তিনি ওই হাসপাতালে যাননি। পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মা চিকিৎসকদের জানান যে মঙ্গলবার সকালে তিনি ছেলেকে নিয়ে আসবেন। ওই তরুণের মা রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা।ভারতে এ ভাইরাসে ১৩৪ জনের সংক্রমণ এবং তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশেও ১০ জন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে।
সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩১২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে মারা গেছেন ৭ হাজার ৯৭৯ জন।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে দেশটির ৮০ হাজার ৮৯৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর তিন হাজার ২৩৭ জন মারা গেছেন। এরপর বিশ্বের অন্তত ১১৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস।
অন্যদিকে ইরানে করোনাভাইরাসে ১৬ হাজার ১৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এতে মারা গেছেন ৯৮৮ জন। ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৫০৬ জন, দেশটিতে মারা গেছেন ২ হাজার ৫০২ জন। স্পেনে ১১ হাজার ৮২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৫৩৩ জন। ফ্রান্সে ৭ হাজার ৭৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ১৭৫ জন মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৫৬ জন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মারা গেছেন ১০৯ জন। অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭২, এর মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন।