গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর করোনার প্রথম 'বোমা' বিস্ফোরণ হয় চীনের উহান শহরে। শুধুমাত্র দেশটিতেই গত ৩ মাসে আক্রান্ত হয় প্রায় ৮১ হাজার ১৭১ জন। আর মারা যায় ৩ হাজার ২৭৭জন।
এরপর মাত্র ৩ মাসেই বিশ্বের ১৯৬ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাসটি। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ১৭ হাজারের বেশি মানুষ। চীন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থা দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। ১৮ হাজার ৬০৫ জন এই ভাইরাসের কারণে ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে।
পুরো বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৭৯ হাজার ২১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাদের মধ্যে ১২ হাজার ৯৮১ জনের অবস্থা গুরুতর। বাকিদের শারীরিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো থাকলেও এদের কেউই পুরোপুরি ঝুঁকি মুক্ত নয়।
আশার কথা হচ্ছে, সারা বিশ্বের প্রায় ১ লাখ ৩ হাজার ৭৪৮ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
চীন এই ভাইরাসের উৎপত্তি স্থল হলেও ইতালির বর্তমান চিত্র ভয়াবহ। প্রতিদিনই সরকারি হিসেবে প্রায় ৬০০ লোকের মৃত্যু হচ্ছে। মৃত্যুর দিক থেকে চীনকে দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে দেশটি। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছে ৬ হাজার ৮২০জন। এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে করোনায় আক্রান্ত বয়স্কদের চিকিৎসা না দিয়েই হাসপাতালগুলো তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে কোথাও কোনো জায়গা নেই। শেষ হয়ে আসছে চিকিৎসা সামগ্রীও।
গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র ইতালিতেই ৭৪৩ জন মারা গেছেন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২৪৯ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা ইতালির মতোই। মৃতের সংখ্যা ইতালির থেকে অনেক কম হলেও আক্রান্তের দিক থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করেছে দেশটি। একদিনেই প্রায় ৯ হাজার ২৪৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ১৩২ জন।
মৃতের সংখ্যার দিক থেকে পিছিয়ে নেই স্পেনও। ২৪ ঘণ্টার হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছুঁই ছুঁই। আর একদিনেই আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৯ জন।
ফ্রান্স, ইরান, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডে প্রতিদিনই রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে ২ হাজার ৪৪৮ জন আক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছেন ২৪০ জন। ইরানে ১ হাজার ৭৬২ জনের বিপরীতে ১২২ জন, জার্মানিতে ৩ হাজার ৯৩০ জনের বিপরীতে ৩৪ জন, যুক্তরাজ্যে ১ হাজার ৪২৭ জনের বিপরীতে ৮৭ জন ও নেদারল্যান্ডে ৮১১ জনের বিপরীতে ৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেছে।
সব মিলিয়ে পুরো বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রায় ৩৮ হাজার ৮৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ২ হাজার ৯৮ জন।