করোনাভাইরাসের কারণে শোচনীয় অবস্থায় সেনেগালের পথশিশুরা

আফ্রিকা, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 16:10:20

প্লাস্টিকের স্যান্ডেল ও ছেঁড়া ময়লা পোশাক পরা একদল শিশু রাস্তার এক পাশে জটলা করছে। স্বেচ্ছাসেবীদের স্যান্ডউইচ আর পানির গাড়ি দেখতেই দৌড় দিল সেদিকে। দৃশ্যটি সেনেগালের রাজধানী ডাকারের।

করোনাভাইরাসের সংকটকালে ডাকারের পথশিশুদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে একটি স্থানীয় সেবা সংস্থা ‘ভিলেজ পাইলট’। তারা প্রতিদিন তাদের খাবার সরবরাহ করছে।
যেসব শিশু নানা কারণে পথে পথে দিন কাটায়, তাদের জীবন সব সময়ই কঠিন। কিন্তু ক্রমবর্ধমান মহামারির কারণে গত মাস থেকে জারি করা সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ এ পথশিশুদের জীবন আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৯৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

এসব শিশুর কেউ কেউ বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে, আবার অনেকেই কোরানিক স্কুলের ছাত্র, যাদের তালিব বলে ডাকা হয়। এদের বাধ্য করা হয় ভিক্ষা করতে। যদি পর্যাপ্ত টাকা নিয়ে ফিরতে না পারে, তাহলে মারধর করা হয়। অনেক পথশিশুই আছে যারা এসব স্কুল থেকে পালিয়ে এসেছে।

দীর্ঘদিন যাবত সেনেগালের পরিবারগুলো তাদের শিশুদের ইসলামী শিক্ষা এবং চরিত্র গঠনের জন্য দারাস নামের স্কুলে পাঠায়। এ শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিশুদের নম্রতা শেখাতে তাদের দিয়ে খাবার ভিক্ষা করানো হয়।

ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট ও বেকারি যেগুলো শিশুদের খাবার দিত, বন্ধ হয়ে গেছে। দয়ালু পথচারীরাও এ সময় শিশুদের কাছে আসতে ভয় পাচ্ছে। কারফিউয়ের কারণে টহলদার পুলিশের ভয়ে পার্ক করা গাড়ির নিচে শুয়ে লুকিয়ে রাত কাটাচ্ছে অনেক শিশু।

খাবার বিতরণ করতে আসা ১৯ বছর বয়সী আলফা কামারা রয়টার্সকে বলেন, এখন পরিস্থিতি খুবই জটিল। আরো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, কিন্তু খাবার মত কিছুই নেই।

ভিলেজ পাইলট প্রায় ৩০ বছর ধরে কাজ করছে। তারা সাধারণত রাস্তা থেকে শিশুদের তুলে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় ও সেবা দেয়। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে তারা বাধ্য হয়ে প্রতিদিন খাবার বিতরণ শুরু করেছে।

এ সংস্থাকে কারিগরি প্রশিক্ষণদানকারী ফ্যাটি ডায়োপ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশেষ করে পথশিশুরা খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় আছে। কারণ দুর্বল স্যানিটেশন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি রয়েছে মাদকের সাথে সম্পৃক্ততা।

তিনি আরো বলেন, ডাকারে করোনাভাইরাস দেখা দেওয়ার আগে আমরা রাস্তায় অনেক যক্ষ্মা রোগী দেখেছি। কিন্তু মানুষ এখনো বুঝতে পারছে না যে এ শিশুরা সেনেগালের জন্য টাইম বোমার মত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর