ফ্রান্সে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব, ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানোসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিক্ষোভ সমাবেশ।
বুধবার (৪ নভেম্বর) বাদ জোহর শায়খুল হাদিস আল্লামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ীর আহ্বানে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের তওহিদি জনতা অংশ নেন। সমাবেশ শুরুর আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে সিলেটের কোর্ট পয়েন্ট, সিটি পয়েন্ট, সুরমা পয়েন্ট ও জিন্দাবাজারসহ আশপাশের এলাকাসমূহ।
মাওলানা আবুল হাসান ফয়সল, মাওলানা জুনাইদ কিয়ামপুরী, মুফতি রশিদ আহমদ, মাওলানা আহমদ সগীর ও মাওলানা নিয়ামত উল্লাহর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি করেন শায়খুল হাদিস আল্লামা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী।
শায়খ গাছবাড়ী তার বক্তব্যে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের কাজকে জঘন্যতম উল্লেখ করে শরীরের শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জন দিয়ে হলেও রাসূল (সা.)-এর সম্মান সমুন্নত রাখার কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ ও সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শায়খুল হাদিস আলীম উদ্দিন দুর্লভপুরী, শায়খুল হাদিস নরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জি, নাজিমে এদারা মাওলানা আব্দুল বছির সুনামগঞ্জি, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মাওলানা শেখ মহসিন আহমদ কৌড়িয়া, মাওলানা শায়েখ আব্দুল গফফার রায়পুরী, মাওলানা শামসুদ্দিন দুর্লভপুরী, মাওলানা মুফতি ওলিউর রহমান দারুস সালাম, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু, মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, মাওলানা হেলাল আহমদ হরিপুরী, মাওলানা ইউসুফ শামপুরী, মাওলানা আব্দুস সোবহান কাজিরবাজার,মাওলানা মুফতি রশীদ আহমদ মকবুল, মাওলানা মুফতি আবুল হাসান লামারগ্রাম, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা আব্দুল জব্বার লামনিগ্রাম, মাওলানা আব্দুস সালাম বাগরখালী, মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ, মাওলানা আব্দুল মালিক মোবারকপুরী, মাওলানা মাসুক আহমদ সালামী, মাওলানা মুহিবুর রহমান, মাওলানা নুরুল হক বিশ্বনাথী, মাওলানা আব্দুল মুছব্বির জকিগঞ্জি, মাওলানা হারুনুর রশীদ আল আজাদ, মাওলানা মুহিব্বুর রহমান মিঠিপুরী, মাওলানা সাইফুল্লাহ নয়াসড়ক, মাওলানা ফারুক আহমদ শাহবাগী, মাওলানা শরীফ আহমদ শাহান, মাওলানা ইমদাদুল্লাহ কাতিয়া, মাওলানা আবুল হোসাইন চতুলী, মাওলানা গাজী রহমত উল্লাহ, মাওলানা ইকবাল হোসাইন, মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, আলহাজ্ব মাওলানা এমরান আলম, মাওলানা জামীলুল হক, মাওলানা বুরহান উদ্দিন, মাওলানা শেখ নাসির উদ্দিন, এডভোকেট মোহাম্মদ আলী, মাওলানা নজরুল ইসলাম তোয়াকুলি, মাওলানা হারুনুর রশীদ চতুলি, মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম হাজীপুরী, মুফতি জিল্লুর রহমান, হাফিজ মাওলানা আতিকুর রহমান, মুফতি মুহাম্মাদ মাহবুবুল হক, মুফতি সৈয়দ নাছির উদ্দিন আহমদ, মাওলানা জিয়াউর রহমান ও মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে ৬ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন শায়খুল হাদিস মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি। প্রস্তাবনাগুলো হলো-
১. রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁকে মুসলিম বিশ্বের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
২. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে।
৩. ফ্রান্সের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ফ্রান্স থেকে দূতাবাস প্রত্যাহার করতে হবে। ফ্রান্সের সকল পণ্য আমদানি বন্ধ করতে হবে
৪. অবিলম্বে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
৫. বাংলাদেশে রাসূল (সা.)-সম্পর্ক কটূক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আইন পাশ করতে হবে।
৬. দেশের সকল নবীপ্রেমিক নাগরিককে ফ্রান্সের পণ্য ক্রয় ও ব্যবহার বর্জন করে রাসূল (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।