২০২২ সালের জন্য সুপারিশকৃত নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার বিষয় বাদ দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই সুপারিশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামি চেতনাবোধ মুছে ফেলা ও নাস্তিক্যবাদী ধ্যান-ধারণার প্রসার ঘটানোর ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দেওয়ার সুপারিশ হয়ে থাকতে পারে। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত জাতি কখনও মেনে নেবে না। আমরা অবিলম্বে এই সুপারিশ বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
জমিয়ত মহাসচিব আরও বলেন, শিক্ষার লক্ষ্য তো শুধু রুটি-রুজির জন্য জ্ঞান আহরণ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা নয়। বরং শিক্ষার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য থাকে, নীতি-নৈতিকতা, বিনয়, মানবদরদ, ইনসাফপূর্ণ দেশ ও সমাজ গঠন এবং সৎভাবে জীবন পরিচালনার প্রেরণা লাভ ও জ্ঞান অর্জন করা। আর এসব অর্জন করতে হলে অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষা ও তার অনুশীলনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
আল্লামা কাসেমী বলেন, এসএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষা না থাকলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের কাছে ওই বিষয়ের আর গুরুত্ব থাকে না। তখন সঙ্গতভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা গুরুত্ব হারাবে। এতে করে ভবিষ্যত প্রজন্ম ইসলাম থেকে দূরে সরে নাস্তিক্য ধ্যান-ধারণার প্রসার ঘটবে। দেশে খুন-খারাবি, অপরাধ প্রবণতা, ধর্ষণ ও নারী-নিপীড়ন বাড়বে। পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। ধর্মীয় অনুশীলন ও নীতি-নৈতিকতা থেকে দূরে সরে পড়ে আত্মকেন্দ্রিকতা ও ভোগবাদের প্রতি ভবিষ্যতপ্রজন্ম আরও বেশি ঝুঁকে পড়বে। পুঁজিবাদের বাজার সম্প্রসারিত হয়ে শোষণ ও লুটপাট আরও গভীর হবে।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে জন চাহিদা অনুযায়ী কাজ করা। জনসমর্থনহীনতার দূর্বলতা কাটাতে হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদী চক্রের নীলনকশা এবং পুঁজিবাদের বাজার তৈরির প্রেসক্রিপশন মেনে সরকারকে দেশে ইসলাম খেদাও কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে জনগণ কখনও দেবে না।
তিনি এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দেওয়ার সুপারিশ বাতিলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ঈমান-আকিদা ও নীতি-আদর্শ হুমকিমুক্ত রাখার স্বার্থে প্রয়োজনে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।